“..অনাদ্রিতাকে লেখা প্রথম চিঠি..”

“..অনাদ্রিতাকে লেখা প্রথম চিঠি..”

“..অনাদ্রিতা,
এভাবে নয়, আর এভাবে নয়
এবার তোমাকে আমার মতো ভালবাসতে দাও
তোমার শেখানো ভালোবাসার আদর্শলিপি
জুড়ে আছে বর্ণ, অক্ষর;
নিয়ে নিয়ম ভাঙ্গার ভয়
এবার তোমাকে আমার মতো ভালবাসতে দাও!

একবার তোমাকে আমার মতো ভালোবাসার পরে
থাকবে না কোনও কথা তোমার কণ্ঠে
ঝরবে শুধু প্রিয় গানের গুনগুন তোমার কণ্ঠ জুড়ে
থাকবে না কোনও হাহাকার, কোনও দীর্ঘশ্বাস
সেখানে অষ্ট-প্রহর জন্ম নেবে
অসংখ্য অমল, অদ্ভুত গোলাপের নির্যাস!

আমার স্পর্শ বৃষ্টি হয়ে পড়বে বেয়ে তোমার শরীর
প্রতিটি লোমকূপ অধিকারে আসবে
দখল হবে তোমার ভেতর-বাহির
বইয়ের পাতায় উঠবে জ্বলে বর্ণগুলো আমার নামের
একা আয়নায়ও পাবে মুখছবি আমার
অশ্রু তোমার জমবে শুধু মোহনা পেতে আমার ঠোঁটের
তোমার শেখানো ভালোবাসার আদর্শলিপি
তুমি ফিরিয়ে নাও;
একবার তোমাকে আমার মতো ভালবাসতে দাও!

একবার তোমাকে আমার মতো ভালোবাসার পরে
তোমার ছায়ায়, তুমি খুঁজবে আমায় – রাতের আঁধারে
মসলিনের ঐ শীতল শাড়ি
উষ্ণতায় জড়াবে এই আমারই
তোমার গলায় নেকলেস হবে
আমার চুম্বনেরই দাগ;
তোমার শেখানো ভালোবাসার আদর্শলিপি
তোমার কাছেই থাক!

একবার তোমাকে আমার মতো ভালোবাসার পরে
চোখের কাজল রাখবে ধরে – তোমার চোখে এই আমাকে
তোমার সৌন্দর্য পাবে পূর্ণতা শুধু আমার ‘হ্যাঁ’ বলাতে
আনবে কিনে ঘুম আমার; ঢাকা বালিশ – তোমার ছড়ানো চুলে
খুঁজে পাবে না একটিও উপযুক্ত নাম আমায় ডাকবে বলে!

আলো-আঁধারিতে ভরা
তোমার ভালোবাসার আদর্শলিপি
তোমার কাছেই থাক
আমার ভালোবাসায় জন্ম নেবো আমি
হয়ে তোমার জন্মদাগ!

এভাবে নয়, আর এভাবে নয়
একবার তোমাকে আমার মতো ভালোবাসার পরে
জন্ম হবে তোমার - মুহূর্তে মুহূর্তে
মৃত্যু – প্রহরে প্রহরে!..”

..'JEDIN VALOBASHA BIDAY NEBE'..

“..Jedin valobasha biday nebe
Hete jaabe thik-e tomar shuvro du’ti pa
Chena-ochena poth dhore
Shudhu oi tonny komore dheuer moto
Kono dola thaakbe na;
Khor-kutor basha chhere hoyto
Gaayok pakhigulo eshe thhot khulbe
Eit-Pathorer barandaay, janalaay
Buk-Gola fete rokto ber hobe
Kintu kono shur ber hoye ashbe na;
Prochondo jhorer raate
Batasher shaathe palla diye
Megh chhobe vito Daarkaak
Kintu nirey ferar kono proyojon
Sha onuvob korbe na;
Jedin valobasha biday nebe
Shomudro-tirey bosha ekaki chheleti
Srote muchhe jaowa naam
R ekbar-o likhbe na!

Akashe hoyto shedin-o futbe
Ojosro chhoto-boro Tara
Raatrir kopaaljure thaakbe
Chirojoubona chaad, kintu
Jedin valobasha biday nebe
Oi chaad r khoshe pora Taray
R kono jora chokh
Drishty hoye onushoron korbe na!

Jedin valobasha biday nebe
Onurbor hoye jaabe vumi
Jhora pataay holud hobe
Shobujer aadigontohimachol;
Pajor faatiye dirghoshaash r
Baashpojole hahakaar korbe Prithibi

Jedin valobasha biday nebe
Jothhore jothhore jonmaabe
Oshonkhyo aadorsho Naari ebong Purush
Shudhu jonmaabe na kono Kobi!..”

‎..‘AMAR SHIYORE KAYA KAPA CHHAYA’..

‎..‘AMAR SHIYORE KAYA KAPA CHHAYA’..

“..Amar shiyore kaya kapa chhaya
Shorey giye hou tumi
Polatoka ek shaajher Dahuki
Paaye bedhe bedonar jhumjhumi
Ek-e shur niye sharabela
Kede fera ek-e Behaag
Shaajher prodip niviye duliye
Adharer odhore garho daag
Goriye probaho dhire poth haraay
Rup niye jol shugondha
Aalpona aanka mejhe-te du’chokh
Itihaash vole bortomaane peye
Chirochena tomar paayer chhaap!

Ruposhi tumi aage-o chhile
Aakangkhito korechhi ami;
J du’chokhe foot-to shuvro Paayra
Sha du’chokh aj khuni!

Amar baalisher niche kena ghumera ghumaay
R kheyaler deyale – goto Borshar protiddhoni!..”

“..না বলা কথা..”

“..না বলা কথা..”

“..প্রথম প্রেমের প্রথম অভিমানে
জল টলমল করা দু’চোখের মতো
সারিবদ্ধ মেঘ গর্ভবতী যখন আকাশে
রাতের আঁধারের নিমন্ত্রনে সাড়া দিয়ে
হেঁটে যায় তরুণ কবি এক উদ্ভ্রান্ত
আলো-ছায়ায় শহরের নগ্ন পিঠ মাড়িয়ে

ভেতরে তার নিদারুণ আকুতি
রক্তকণায় ফোটে এক একটি সম্পূর্ণ শব্দ
কখনও পাখি হয়ে উড়ে যাচ্ছে
কখনও গন্ধ হয়ে ভেসে যাচ্ছে
অসহায় কবি জানে জন্ম নেবে
আজ একটি কবিতা
যেখানেই দৃষ্টি প্রসারিত করা হয়
শব্দ দেখা যায়, বর্ণ দেখা যায় সেখানেই
রাজপথে বর্ণ, ল্যাম্পপোস্টের শরীর বেয়ে
গলে গলে পড়ছে অক্ষর;
ডাস্টবিনের ঢাকনার উপরে ছন্দ
দেওয়ালের পোস্টারগুলোতে শব্দ
নারকেল গাছ, আম, কাঁঠাল,
পাথরকুচি, ক্যাক্টাস -
নার্সারীর ঐ চারাগাছগুলোতে;
ঝাঁপি ফেলা সবজির দোকানগুলোতে
বাঁ হাতের ঘড়ির কাঁটায়
শার্টের বুক পকেটে, মানিব্যাগে
চারপাশে শুধু বর্ণ, শব্দ, ছন্দ
তার ভেতরটা দুমড়ে-মুচড়ে উঠে
আসছে নানা রংয়ের শব্দ, বর্ণ

সে অসহায়ের মতো তাকিয়ে
দেখে সংবাদ শিরোনামের মতো
লাইন ধরে দ্রুত চলে যাচ্ছে শব্দ
একের পরে এক
নির্জনতা, শূন্যতা, কাতরতা
দলা পাকিয়ে ভেতর থেকে তার
জন্ম দিচ্ছে শব্দ, বর্ণ, ছন্দ
হঠাৎ হঠাৎ দু’একটি লাইন দেখা যায় -

‘মানুষ আমি
আমার ভুল থাকবেই’

আবার সরে যায় খণ্ডিত শব্দ
পেঁচানো সাপ হয়ে, ছিটকে পড়া বাদুড় হয়ে
কখনো ঘরের কোণার মতো চতুর্ভুজ শব্দ
কখনো রঙ্গীন বেলুনের মতো প্রায় গোল
আবার শব্দের লেজে শব্দ
যেন এক শব্দের ধূমকেতু
হঠাৎ হঠাৎ দু’একটি লাইন দেখা যায়
দূর বারান্দায় জ্বলা বাতির মতো -

‘আমি পুরুষ
আমার চরিত্রে ত্রুটি থাকবেই’

নিজ শরীর বড়ো অচেনা লাগে
অনুভূতিহীন, রূঢ় এবং
বড়ো বেশী ধীরগতির যেন সবকিছু;
হৃদপিণ্ড কাঁপছে অচেনা তালে
মাথার ভেতরে লক্ষ লক্ষ ঘড়ির সম্মিলিত টিকটিক
উপচে আসছে, দলবেঁধে আসছে
ভেতর-বাহিরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছিঁড়ে
গৃহীত-বর্জিত সব কিছু চাপা পড়ছে
ভেতর থেকে শব্দ আসছে
গহীন থেকে বর্ণ আসছে

আলো-আঁধারি চোখের পর্দা জুড়ে
বিবশ আঙুল, স্পর্ধিত রক্তে
উঠে আসছে শব্দ, বর্ণ, ছন্দ
প্রবল ব্যাথা, কাতরতা,
অশান্ত উচ্ছ্বাস, স্পর্ধা
ভেতর থেকে ঠেলে এক একটি লাইন
তুলে তুলে দিচ্ছে উপরে, আরও উপরে..

অচেনা শরীরে, অপার্থিব অনুভূতির
উদ্ভ্রান্ত তরুণ কবি এক
হেঁটে যায় আঁধারে, পথে
প্রসব-বেদনা কতো যে ভয়ংকর তীব্র
নারী ও কবি ছাড়া
কে আর জেনেছে কবে?..”

..'তারে হলো না বলা’..

..'তারে হলো না বলা’..

“..তার চাঁদের আকাশ ফাঁকা
অসংখ্য ক্ষণজন্মা নক্ষত্রবীথিকায়
বিশাল কালো এক পুস্তক হয়ে
আকাশ তার মরা জোছনায় ঢাকা

অনিমেখ তার অপেক্ষমান চোখে
তারাদের ক্ষয়ে যাওয়া
অতঃপর, কৃষ্ণ-গহ্বর হওয়া ;
স্বনির্বাচিত তার শান্ত জলেতে
কখনও খসে যাওয়া পাতাদের ঝরে পড়া
আর, দু একটা জোরালো স্মৃতির ঘাই দেয়া
যেন জল-চাদরকে মৃদু আন্দোলিত করা !

এ শহর তার কাছে প্রবল ঋণী
কতো অজস্র প্রেমিক-পুরুষ
তার অপেক্ষায় – রুপান্তরিত আজ ‘গাছ’-এ ;
কতো অজস্র প্রেমিক-পুরুষ
তার অনাদরে –
নোংরা জলেতে ফুল হয়ে আজ ভাসে !

কোথাও সে স্থিরতা পায়নি তবুও
পায়নি সে আস্থা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে
অথবা নিবিড় বন্ধনে বাঁধা বলিষ্ঠ লোমশ বক্ষে
হয়তো বোঝেনি তার চাওয়াকে
হয়তো বোঝার ভুলে
ক্যানভাস তার দ্বিধান্বিত হল
অচেনা রং-তুলির ছোবলে !

অযাচিত প্রাপ্তির গাঢ় কুয়াশায়
আজ সে গভীর একা
ঠিক যতটা সুবিন্যাস্ত চুলের মাঝে
থাকে একাকী সিঁথির রেখা !

সে আজও বুঝি জানে না
পৃথিবীর বুকে আছে মানবী যত
তাদের সবাই মানসী হয় না ;
সে বুঝি আজও জানে না
নিক্ষিপ্ত আলোয় আপাত দীর্ঘ যে ছায়া
তার স্থায়িত্ব তত দীর্ঘ না !

কতবার তাকে বলতে চেয়েছি
বুঝি তাই আজও তাকে বলা হল না –

‘তার চেয়ে বরং বেশ্যা ভালো
জনে জনে সে দেহ বিক্রি করে ঠিকই
কিন্তু মন বিক্রি করে না !’..’’