..‘যেখানেই ছুঁড়ে দিই দৃষ্টি আমার পিপাসার্ত, বন্য’..
“..যেখানেই ছুঁড়ে দিই দৃষ্টি আমার পিপাসার্ত, বন্য
আসে ফিরে পোষা পাখির মতো সাঁঝের আগেই কম্পিত, সন্ত্রস্ত!
দৃষ্টি আমার সূর্যালোকে খুঁজে পেতে আলোক ধ্রুব
ডানা মেলে দেয় দিগন্ত জুড়ে নাড়িছেঁড়া কোটর জড়সড়
অন্ধকার গলিপথ অথবা রাজপথ তার দুপাখার ছায়ায়
ডালিমের মতো পাঁজর ফাটিয়ে আন্তর দৃশ্যাবলী দেখায়
অজস্র প্রার্থনালয় অলিতে-গলিতে বিলাসবহুল তাদের সজ্জা
সবকিছুই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে;
অপর্যাপ্ত শুধু
প্রার্থনারত দুহাতের সংখ্যা!
কেন এতো বিলাসবহুল; এতো বহুতল; এতো সংখ্যক প্রার্থনালয়?
কেন এতো শূন্যতা; এতো পদশব্দহীনতা; এতো নির্জনতার আশ্রয়?
বাংলার মানুষতো এতো ধনী নয়
দান করার মতো এতো বিপুল টাকা
কখনওই ছিলনা তাদের;
শুধু শারীরিক শ্রমই যদি দেবার মতো থাকে
কোথা থেকে আসে এতো বিপুল টাকা
রাজকীয় এসব প্রার্থনালয় স্থাপনের?
দৃষ্টি আমার খুঁজে বেড়ায়
উড়ে বেড়ায় অক্লান্ত পাখায় অবিরাম
দ্বিধান্বিত হয়ে কাঁপে থরথর, পাওয়া
উৎসে রয়েছে খুব কমই সততার শ্রম
সিংহভাগে কালোটাকার নাম!
ওদের চেনে দৃষ্টি আমার; চেনে পলকহীন
এবং পলকফেলা প্রতিটি চোখ
ওরা ছড়িয়ে আছে অসীম চোরাবালি
গ্রাস করছে ছোট্ট সবুজ পোকা,
হলুদ ফুলের গুচ্ছ; সতেজ ভাঙা ডাল
ছায়াঘেরা বাগান, কর্মব্যাস্ত শহর
সম্ভাবনাময় দেশ, আকাঙ্ক্ষিত বাংলার মহাকাল!
ওরা বর্ণান্ধ বলে ওদের কালোটাকাকে
সাদা করতে চায় প্রার্থনালয়ে ঢেলে
ওরা জন্মান্ধ বলে ওদের কালোটাকায়
নির্জীব রংধনু বসায় প্রার্থনালয়ের দেয়ালে!
অজস্র প্রার্থনালয় অলিতে-গলিতে
এ তো নয় আমাদের অপরাধবোধের প্রকাশ
অসংখ্য বিলাসবহুল প্রার্থনালয় গলিপথে-রাজপথে
এ তো শুধুই স্বার্থবাজ কালোটাকা উপার্জনকারীদের বিকাশ!
ছুঁড়ে দেয়া দৃষ্টি আমার পিপাসার্ত, বন্য
ফিরে আসা সাঁঝের আগেই কম্পিত, সন্ত্রস্ত
আড়চোখে তাকায় আমার পিতামহের হাতে গড়া
অজপাড়াগাঁয়ের জীর্ণ প্রার্থনালয়ের দিকে;
প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়, ইতস্তত এগিয়ে যায়
থমকে যায় সুললিত পবিত্র কোরাসে
চমকে যায় অগণিত প্রার্থনারত
চোখের জলে ভেজা হাতের জোড়া দেখে
আলপথে খুব কমই রয়েছে দামি জুতার ছাপ
এখানে এখনও কম – লালাঝরা লোভাতুর জিভ
এখানে এখনও কম – কালোটাকার পাপ!..’’
1 comment:
ami eta bujhi nai...
Post a Comment