..‘অদ্ভুত কেটে গেল সারাদিন আজ’..
“..অদ্ভুত কেটে গেল সারাদিন আজ
যদিও শিশিরের মতো অনিবার্য সকাল
সরোদের বুক চিরে কণ্ঠ তোমার
স্পন্দিত হয়েছিল খুব ভোরে – আমার
মুঠোফোনে বৃষ্টির ঝুম
ঘুম ভাঙ্গিয়ে ছিলে – বহুদূর যাবে বলে
আমার নোটবুক – দু’ঠোঁট তোমার
আমার অ্যালার্ম ঘড়ি – কণ্ঠ তোমার
যা বলার তা না বলে
অসমাপ্ত যদিও স্তব্ধ হঠাৎ
ইথারের অপারগতা তোমাকে পাবার
একবার, দু’বার এবং প্রচেষ্টা শেষবার।
খাবারের টেবিলে কোন কথা বলেনি সেই নারী –
যার উষ্ণ বুক ছিল প্রথম বিছানা আমার
পরিচিত রিকশাওয়ালাগুলো কেন যেন আজ
ফিরেও তাকায়নি আমার দিকে – আর
অপরিচিতদের ছিল সহজাত তাড়া
হেঁটেই পৌঁছলাম – আমার স্বপ্ন, আমার উদ্যান
মেঘ-সেঁচা জল নিয়ে দেখি গোলাপ বাগান
ফুটে আছে পৃথিবী কাঁপিয়ে –
একটি গোলাপও ফিরে দেখলো না
আমি প্রতিটি গোলাপের সামনে অপলক
দাঁড়ালাম; তাঁরা ফিরেও দেখলো না!
আমি একে একে ঘুরে এলাম
কাঁঠালচাঁপা – কৃষ্ণচূড়া – হাসনাহেনার দল
ঘাসফুল আমার, আমার বাঁশফুল;
অপলক দাঁড়ালাম; তাঁরা ফিরেও দেখলো না!
আমি ছুঁয়ে দিলাম সূর্যমুখীদের পাপড়ি
তাঁরা ফিরেও দেখলো না;
আমি নাড়িয়ে দিলাম লজ্জাবতীদের তরল
তাঁরা আঁচলে ঢাকলো না!
আমার মেঘ-সেঁচা জল, বিরল-অনল
তাঁরা ফিরেও দেখলো না!
তবুও অপসৃয় সূর্যালোক ছুটন্ত অবিরত
তুই – তুমি – আপনি এবং অনাহুত
উঠতি রাজনীতিবিদ, উদীয়মান ব্যাংকার, তরুণ বুদ্ধিজীবী
ছিঁচকে চোর, স্বাপ্নিক নির্মাতা, নারীদেহলোভী
সবার ভিড়ে শ্রোতা হয়ে আবারো
অবহেলিত ছিলাম, মুখরিত তাঁরা, আমি অবাঞ্ছিত
নিদাঘ কামনার মতো রাত্রি যখন
আঁটসাঁট জামা ফুঁড়ে স্তনের মতন
বাহিরে নিয়ে এলো – রাজপথে
ফিরে তাকালোনা কেউ আমার দিকে
আগুন এগিয়ে দিল না মোড়ের দোকানদার
হেঁটেই আবারো তাই রাস্তা পারাপার
জনকের সামনে দিয়েই রুমে ঢুকলাম
দেখেনি – যেন ঠিক চেনেনি আমায়
অদ্ভুত কেটে গেল সারাদিন আজ
এমন হয়নি কখনো আগে
হঠাৎ সরোদ ওঠে মুঠোফোনে বেজে
বৃষ্টির মতো ঝরে ঝরে যেন বলে গেলে –
কোথায় ছিলে-কেন ফোন কেটে গিয়েছিল সকালে-
কেন সারাদিনে একবারও পারোনি ফোন দিতে-
এবং অবশেষে অসমাপ্ত কথাটি বললে বেশ ধীরে – ‘ভালোবাসি’
শ্রবণে অঞ্জলি ঢেলে আরও বললে – ‘ভালোবাসি, খুব বেশী’
ঠিক তখনি পেছন থেকে বাবা বললেন –
‘কি আশ্চর্য! কখন এসেছ তুমি?’
আমি নির্বাক – বিলম্বিত শব্দগুচ্ছে দারুণ বিলীন
বুঝলাম – সারাদিন কেন ছিলাম অস্তিত্বহীন!..’’
1 comment:
Valobashi, khub beshi...
Post a Comment