..'তিন ‘অ’ – এর সমষ্টি আমি এখন'..
“..ওষ্ঠরঞ্জনীর মতো বদলে যাচ্ছে
ক্যালেন্ডারের পাতা, একটি একটি করে
চির চেনা আমার এই আমাকে
চিনছি আবার নতুন শব্দের ভিড়ে
হেঁটে গিয়েছি, ছুটে গিয়েছি
পুড়ে গিয়েছি – কেঁদে ফিরেছি
শিল্প, সত্য, সুন্দরকে একটু ছোঁব বলে
হারিয়েছি অনেক, বিলিয়েছি অনেক
অনেকবার আহত এবং নিহত হয়েছি
একটু শিল্পী, একটু ধ্রুব, একটু সুন্দর হব বলে!
সময় আজ আমার মুখে প্রদীপ তুলে ধরে;
চির চেনা আমার এই আমিকে
চিনছি আবার নতুন আলোর ভিড়ে
কোনও উৎসব, অনুষ্ঠান, একত্রীকরণ ভালো লাগে না
ভালো লাগে না সৌহার্দের রঙে আঁকা মুখোশের মাঝে থাকা
অর্থহীন, ভঙ্গুর, প্রাচীন, দ্যার্থক নিয়মগুলো মেনে চলা
এরচেয়ে বরং ভালো লাগে আমার বারান্দায় বসা
চঞ্চল, স্পন্দিত চড়ুইয়ের সাথে একা একা কথা বলা
আমি এখন খুঁজি না বুড়ো, একগুঁয়ে নীতি
খুঁজে ফিরি সমাজ – সহজ, মহাকালিক
তাদের ভাষায় তাই – আমি অসামাজিক!
ভালো লাগে না কৃত্রিম শ্রদ্ধা, শারীরিক কম্পন, নির্বাচিত শব্দ
আমার চোখে অনেক বেশি শ্রদ্ধেয় – মেথর, কুলি, শ্রমিকের দল
মিথ্যে শ্রদ্ধা, প্রশংসা, স্তাবকতার শব্দগুচ্ছ আমার ভেতরে
মরে যায়, শুকনো পাতার মতো শুধু ঝরে পড়ে
ওঁরা জানে, ওঁরা বোঝে ‘সভ্যতা’ কি
বুঝতে চেয়েছি অনেক তবু আমি বুঝিনি
সভ্যতার মিথ্যা সংজ্ঞা, মিথ্যা রুপ আমার কাছে দুর্বোধ্য
ওঁদের ভাষায় তাই – আমি অসভ্য!
তুমি সুন্দর, আর আমি পছন্দ করি সৌন্দর্য
তোমার জন্য তাই অনেক দেখে-শুনে
অনেক দাম দিয়ে একটি দুর্লভ
পরিশ্রমের সুতোয় বোনা,
দুচোখের স্বপ্নের রশিতে টানিয়ে শুকানো,
বুকের উষ্ণতায় ভাঁজ করা মসলিনের শাড়ি
হাতে তুলে দিয়ে বললাম –
‘একদিন না পড়ে এসো, দেখবো;
তুমি হবে ফোটা পদ্ম যখন আমার দুচোখ
হবে বিস্মিত ঝিল!’
তিনটি শব্দের বদলে দুটি শব্দ একত্রিত করে
তুমি বললে – আমি অশ্লীল!
এখন আমি আর খুঁজি না
জলের তলে জলের তোড়ে জলজ স্রোতে – ঢেউ
এখন আমি আমার কাছে
একটা নতুন কেউ
এখন আমি খুঁজে বেড়াই
মাছের লেজের দোলার সাথে ভাঙ্গা রুপার ঝিলিক;
তিন ‘অ’ – এর সমষ্টি আমি এখন
তাদের, ওঁদের, তোমার ভাষায় –
‘অশ্লীল’, ‘অসভ্য’ এবং ‘অসামাজিক’!..”
No comments:
Post a Comment