June 22, 2012

“..অনাদ্রিতার কাছে চাওয়া..”

“..অনাদ্রিতার কাছে চাওয়া..”

“..অনাদ্রিতা,
চাচ্ছি না আমার হৃদপিণ্ডের রিক্টার স্কেলে
নয় মাত্রার কম্পন ঘটিয়ে মুঠোফোনের পর্দায়
জ্বলে উঠুক তোমার নাম;
ভেজা গোলাপের গন্ধ ছড়িয়ে বৃষ্টির মতো
নামুক আমাদের কথোপকথনঃ

‘আজ সবুজ শাড়ি পড়বো’
‘অরণ্যের মতো?’
‘না, সবুজ – তোমার কবিতার মতো!
আজ শিশু একাডেমীতে গাইবো, তুমি আসছো তো?’
‘না, সময় হবে না,’

শ্রবণেন্দ্রিয় দিয়েই দেখতে পেতাম খানিকটা সরে যাওয়া
তোমার মুখ, অনেকটা জলে ভেজা তোমার চোখ;

‘তুমি কি কাঁদছো?’
‘নাতো! চোখে কি যেন একটা পড়লো!’

চাচ্ছি না আমার সারা শরীরের লোমকূপগুলোকে
শিহরিত করে কাজলে রাঙানো প্রসারিত চোখে
অলঙ্ঘনীয় আহবান; আলতো করে ধরে রেখে আমার অনামিকা
ভাসুক আমাদের কথোপকথনঃ

‘কাল একসাথে ঘুরবো’
‘গৃহহীনদের মতো?’
‘না, একসাথে – তোমার দু’ঠোঁটের মতো!
কাল পহেলা ফাল্গুন, একসাথে রিকশায় ঘুরবো, তুমি যাবে তো?’
‘না, সময় হবে না,’

কি নির্দ্বিধায় তোমার মোমের মতো তনু
বেয়ে নামতো কাজলের গাঢ় কালো;

‘তুমি কি কাঁদছো?’
‘নাতো! চোখে কি যেন একটা পড়লো!’

চাচ্ছি না ঝড়ের মতো লণ্ডভণ্ড করে দাও শরীর আমার
অতঃপর একটু নিঃশ্বাসের খোঁজে তোমার ঠোঁটে রাখা
আমার শ্রান্ত দু’ঠোঁট কম্পিত হোক
তোমার প্রশ্বাসের ভৈরবীতে;
গুঞ্জরিত হোক আমাদের কথোপকথনঃ

‘আর একটু ধরে রাখো’
‘লতার মতো?’
‘না, ধরে রাখো – গান শেষে তোমার গুনগুনের মতো!
আর একটু ধরে রাখো নিবিড় করে, রাখবে তো?’
‘না, সময় হবে না,’

কি দ্যার্থক তোমার থরোথরো কায়া
প্রচণ্ড বাতাসে উড়ে যাওয়া টিনের চালের মতো
দ্রুত মুখ লুকাতে, টেনে নেয়া দু’হাতে;

‘তুমি কি কাঁদছো?’
‘নাতো! চোখে কি যেন একটা পড়লো!’

চাচ্ছি না মুগ্ধতা, অনুরাগ, ক্ষণিক স্পর্শ, হিমায়িত সুখ
চাচ্ছি না স্তব্ধতা, আয়োজন, উত্তাল কামনা, পরিতৃপ্ত বুক

চাচ্ছি জানাতে – আমার এখন প্রচুর সময়
চাচ্ছি জানতে – এখনও তুমি আছো পাশে আগেরই মতো

চাচ্ছি তুমি দেখো চশমার কাঁচের ওপাশে
আমার দু’চোখ আজ ঝাপসা অনেক

অনাদ্রিতা, চাচ্ছি তুমি বলো –

‘তুমি কি কাঁদছো?’

চাচ্ছি, ভীষণ চাচ্ছি, আমি শুধু বলি –

‘নাতো! চোখে কি যেন একটা পড়লো!’..”

No comments: