July 17, 2012

“..আমি খুব সম্ভবত মারা যাবো..”

“..আমি খুব সম্ভবত মারা যাবো..”

“..আমি সম্ভবত নির্বাসিত হবো সমাজ থেকে খুব দ্রুত
আমি সম্ভবত বিদায় নেবো হবার আগে জীবন্মৃত !

বন্ধুরা মিলে যখন আড্ডা দিই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবসরে
সামনে দিয়ে যাওয়া অপ্সরীদের ঢেউ খেলানো বুক হয়তো
পড়ে কারও চোখে অথবা হয়তো নিটোল কোমর ক্রমহ্রাসমান
মুহূর্তের মধ্যে তারা জন্ম দেয় আবেগি উপমা, অতুলনীয় শব্দগুচ্ছ
কিন্তু আমি তাকিয়ে থাকি নিস্পলক তার জুতোজোড়ার
ভেতরে থাকা স্নিগ্ধ পদ্মফুলের দিকে, তার নাকের ডগায়
সূর্যালোকে দীপ্ত এক বিন্দু মুক্তোর দিকে, তার এলো চুলে
চমকানো অবিন্যাস্ত চন্দ্র সিঁড়ির দিকে,
আমি দু’চোখ ভরে দেখি তৃপ্ত পথের ধুলিকনা
দেখি রুক্ষ সূর্যালোক আদ্র
দেখি এলোমেলো বাতাস ভীষণ ভাবে মুগ্ধ
আমি দু’চোখ ভরে দেখি সৌন্দর্য – সৃষ্টি ও স্রষ্টায় !

আমি খুব সম্ভবত অন্ধ হবো –
অমল কোন সৌন্দর্য দেখতে না পারার ব্যর্থতায় !

সবাই যখন খুব প্রশংসা করে কোন গানের
উচ্ছ্বসিত হয়ে বার বার বলে তার সঙ্গীতায়োজনের কথা,
তার গায়ক অথবা গায়িকার কথা, তার দৃশ্যায়নের কথা
আমি কান পেতে শুনি একেকটি বাদ্যযন্ত্রের কথা
শুনি গীতিকারের প্লাবিত বুকের ব্যথা, শুনি প্রতিধ্বনি,
হাহাকার – তৃপ্তি সুরকারের, খুঁজি কতোটা বিরহী কোকিলের মতো
কতোটা আশাবাদি চাতকের মতো - গায়ক অথবা গায়িকা
আমি কান পেতে শুনি মূর্ছনা – আকাঙ্ক্ষিত চঞ্চলতায় !

আমি খুব সম্ভবত বধির হবো –
নৈব্যক্তিক কোন কবিতা শুনতে না পারার অস্থিরতায় !

পরিচিতরা যখন খুব গর্ব বোধ করে অনর্গল
বলতে পেরে অর্থহীন কথা, মিথ্যে স্তাবকতা
স্বল্প জ্ঞান আর হাতে গোনা কিছু শব্দ-বাক্য
সম্বল যাদের আজকাল, গলার রগ ফুলিয়ে
তারা যখন ছায়া খেয়ে বেঁচে রয় হলুদ চারার মতো
এবং নিজেদের ভাবে অদ্বিতীয়, দুর্লভ বাগ্মি
আমি উইপোকার মতো নিঃশেষ করি ইতিহাস
কেঁচোর মতো খুঁড়ে যাই নবাগত শব্দ-বাক্যের ভূমি
কাকের মতো ঠুকরে বের করি মুখোশের ভেতরে যার বসবাস
আমি কেঁপে উঠা কণ্ঠে নির্লিপ্তভাবে বলি
বক্তার সফলতা আলোকিত – নির্মোহতায় !

আমি খুব সম্ভবত বোবা হবো –
ধ্রব কোন সত্য বলতে না পারার অক্ষমতায় !

আমার ব্যর্থতা, অস্থিরতা, অক্ষমতা
আজকাল আমাকে খুব ভাবায়;

আমি মনে হয় না মারা যাবো
অন্যেরা যেভাবে মারা যায়

আমি খুব সম্ভবত মারা যাবো
প্রিয় তোমাদের অবহেলায় !..”

No comments: