August 31, 2012

..‘এলোমেলো ১ - ৫’..

..‘এলোমেলো ১ - ৫’..

..‘এলোমেলো-১’..

“..জানতে চেওনা রাতের শেষে
ঐ তারাগুলো কোথায় যায় !
আলো ছড়াতে, ভিড় করে সব
তোমারি চোখের নীলিমায় !..’’

..‘এলোমেলো-২’..

“..আমি নই, আমার স্মৃতি
এখন তোর কাছে প্রিয় ;
দু’ঠোঁট নয়, তোর দু’চোখ
তাই বুঝি এতো আদ্র !..’’

..‘এলোমেলো-৩’..

“..জল কুড়াবি সই ?
আজ আকাশের বুক চিরে জল
পড়ছে বেয়ে ঐ ;
এ জলে হবে না ?
খুলে দেবো দু’চোখের আগল ?
তোর আঁজলায় কুলাবে না !..’’

..‘এলোমেলো-৪’..

“..ওষ্ঠ রেখে অধরে, বুকে রাখো হাত
কাঁপন কি টের পাও ?
আমি অন্তর্লীন তোমাতেই – তুমি চাও বা না চাও ;
দু’বাহু আমার ছড়ানোই আছে
গেঁথে নিও বুকেতে আমায় – যদি সময় পাও !..’’

..‘এলোমেলো-৫’..

“..আজ থেকে দশ বছর পর
কে থাকবে কোথায় আর
কার সাথে বাঁধবি ঘর ?
আজ তাই এই এখন
ভালোবেসে ফেল, কিছু না ভেবেই
পাশে আছে সে যখন !..’’

August 26, 2012

“..কেন ডাকিনি তোমাকে বিশেষ কোন নামে..”

“..কেন ডাকিনি তোমাকে বিশেষ কোন নামে..”

“..কখনও ডাকিনি তোমাকে বিশেষ কোন নামে
না কখনও তোমার নামকে সংক্ষিপ্ত করে,
না কখনও প্রচলিত প্রেমময় শব্দগুচ্ছে ;

শুনেছি অগণিত ফুলের, পাখির, প্রত্যঙ্গের নাম
যেগুলো দিয়ে ডাকা হয় প্রেয়সীদের, আকাংখিতাদের
সে নাম শুনে তারা পুচ্ছ মেলে ধরে
বর্ণিল ময়ূরের মতো স্নিগ্ধতা ছড়ায়,
পালক ফুলিয়ে রাজসিকভাবে ঘুরে ঘুরে
পায়রার মতো আবেশে জড়ায়,
মুহূর্তের মধ্যে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে
চঞ্চল চড়ুইয়ের মতো হৃদস্পন্দন বাড়ায়

প্রায় সময়ই তোমার কণ্ঠে ঝরে পড়ে অপ্রাপ্তি
যখন তোমার কোন বন্ধু বিশেষ নামে ডাকে তার প্রিয়কে ;
তোমার ভেতরটা কি তখন খুব বেশি ফুঁপিয়ে উঠে ?

আমার এই ছোট্ট মাতৃভূমিতে ৩৪টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে
এখানে আরও আছে ৬১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
এগুলোর কোনটিতেই এমন কোন শব্দগুচ্ছ শেখানো হয়না
যা দিয়ে আমি তোমার সবটুকুকে ডাকতে পারি
যা দিয়ে আমি তোমার ভেতর – বাহিরকে সাজাতে পারি
যা দিয়ে আমি আমাতে অন্তর্লীন তোমাকে
নিখুঁতভাবে প্রকাশ করতে পারি
ভালোবাসার শব্দগুচ্ছ শেখানো হয়না বলেই
এখানে আমরা প্রকৃত প্রেমিক হয়ে উঠতে পারিনা
আর প্রকৃত প্রেম নেই বলেই এখানে
মানুষ এবং পশুতে এতো বেশি পার্থক্যহীনতা !

মিথ্যে বলা হবে যদি তোমায় একটি পাখির নামে ডাকি ;
তোমার কণ্ঠের মতো কোন পাখির গান আমি আজও শুনিনি
অন্যায় করা হবে যদি তোমায় একটি ফুলের নামে ডাকি ;
তোমার স্পর্শের মতো পবিত্রতা কোন ফুলে আমি এখনও পাইনি
প্রবঞ্চনা করা হবে যদি তোমায় একটি প্রত্যঙ্গের নামে ডাকি ;
তোমার অস্তিত্বের মতো এতোটা প্রয়োজনীয়তা –
কোন প্রত্যঙ্গের প্রতি খুব কমই অনুভব করেছি আমি !

একটু খেয়াল করলেই দেখতে পারবে – স্বার্থপর মিথ্যাচারীতা
প্রচলিত প্রেমময় শব্দগুচ্ছে
একটু চাইলেই বুঝতে পারবে – নিরন্তর সীমাবদ্ধতা
লোক দেখানো এসব সম্বোধনে

আমার প্রেম দুর্বোধ্য
কিন্তু কপট নয় ;
আমার আকাঙ্ক্ষা অতলান্তিক
কিন্তু মুখোশে জড়ানো নয় ;

আমাদের এই ছোট্ট শহরে
সবাই ডুবে আছে প্রতিযোগিতায়
ভালোবেসে ভালোবাসার মানুষটিকে
ডাকার মতো নাম অনুপস্থিত
এখানকার বইয়ের পাতায় –
অর্জিত জ্ঞানে বিপুল অর্থহীনতা
এখানকার প্রিয়-প্রিয়াদের
শব্দ-ছন্দ-উপমায় !

তবু যদি কখনও জানতে চাও হয়ে অভিমানী
কেন ডাকিনি তোমাকে বিশেষ কোন নামে ;
বলবো শুধু – ডেকেছি আমি ঠিকই
বোঝনিতো তুমি এবং এভাবেই যাবো ডেকে
সম্বোধনহীন সম্বোধনে !..”

August 10, 2012

..‘তোমাকে চুমু খেতে আমার দারুণ অনীহা আজকাল’..

..‘তোমাকে চুমু খেতে আমার দারুণ অনীহা আজকাল’..

“..তোমাকে চুমু খেতে আমার দারুণ অনীহা আজকাল
দারুণ অনীহা আজকাল তোমাকে চুমু খেতে
তোমাকে চুমু খাওয়ার পর পরই আমার কণ্ঠনালীতে
জন্ম নেয় এক বিমূর্ত ছাঁকনি, যেখানে আটকে যায়
মিথ্যে স্তাবকতা, তৈলাক্ত তোষামোদ, দ্যার্থকতা
বের হয়ে আসা আমার আন্তর নিটোল গোলাপ শব্দগুচ্ছ
ধারালো ছুরির মতো বিকট শব্দে ফোটাতে থাকে
চারপাশে খুব উঁচুতে উড়তে থাকা রঙিন বেলুন অগণিত
বিদ্ধ করতে থাকে, টুকরো টুকরো করতে থাকে
বিষাক্ত লালায় সিক্ত, ক্ষুধার্ত কালচে হৃদপিণ্ড অজস্র
আমার স্নিগ্ধ, কোমল, সুবাসিত শব্দগুচ্ছ ভেঙ্গে দেয়
তাদের অহমিকার ইমারত সুদৃশ্য;
ওদের চোখে ঝরা ফুল হই আমি
আমার উচ্চারিত শব্দেরা হয় খুনি !

দারুণ অনীহা আমার আজকাল তোমার চোখে চোখ রাখতে
তোমার চোখে চোখ রাখার পর পরই আমার দৃষ্টিতে
জন্ম নেয় এক অদ্ভুত ফ্রেম, যেখানে স্থান পায় শুধু
শিল্পিত শুভ্র, স্বাধীন সুন্দর, আধুনিকতা
প্রসারিত আমার পিপাসার্ত চোখের ফ্রেম যখনই
মেলে ধরি চারপাশে, একে একে অদৃশ্য হতে থাকে
সমাজের এবং জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ
অজস্র প্রার্থনালয়, শিক্ষালয়ের শরীরে বিশাল শূন্যতা
ঘুরে বেড়ানো অসংখ্য তরুণ-তরুণীর প্রত্যঙ্গহীনতা
সিংহাসনগুলোতে বসে থাকা দেবতাদের স্কন্ধের উপর ফাঁপা
পুরো ফ্রেম জুড়ে শূন্যতা, নৈব্যক্তিকতা
আমার দু’চোখে গেঁথে থাকে ভয়ংকর বস্তুহীনতা !

দারুণ অনীহা আমার আজকাল তোমায় জড়িয়ে ধরতে
তোমাকে জড়িয়ে ধরার পর পরই আমার শরীরে, মননে
জন্ম নেয় এক বৈপ্লবিক ধর্ম, যা ধারণ করতে বলে
সূক্ষ্ম মানবতা, কাঙ্ক্ষিত সাম্যতা, ভালোবাসা
বোধের দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়ে শ্রবণে আমার
আছড়ে পড়ে চিৎকার শোষিতের, অত্যাচারিতের
হোঁচট খেয়ে উল্টানো নখ নিয়ে থমকে দাঁড়ায়
রক্তাক্ত আমার দু’পা সাজানো সাইনবোর্ডে – ভুল পথের
আমার হাত থেকে হঠাৎ পড়ে যায়, ছিঁড়ে যায়
সুদৃশ্য মলাটে বাঁধা বানানো ইতিহাসের বই
রক্তবমি করে উগড়ে দেয় পাকস্থলী আমার
লোভের মশলায় মাখানো বিষাক্ত খাবার
ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠে শরীর আমার হারিয়ে উষ্ণতা
আগুন-চুলার মাঝে থেকেও শীতার্ত
ফিরে ফিরে করে আবৃত্তি – ‘ভালোবাসা, মানবতা’ !

আপাদমস্তক প্রেমিক আমি তাই মিথ্যে বলবো না
এ সমাজেই আমার বসবাস, ছেড়ে যেতে পারবো না
জলে ভরা মেঘ না-ও যদি পাই
ভালোবেসে জন্ম দেবো শীতল দখিন হাওয়া ;

তাই তোমাকে ভালবাসতে আজকাল, সত্যি বলছি –
আমার দারুণ অনীহা !..’’

August 03, 2012

..‘এলোমেলো ১ - ৫’..

..‘এলোমেলো ১ - ৫’..

..‘এলোমেলো-১’..

“.. এই যে দেখো আজ তোমায় ভুলে
সারাটা দিন কাটিয়েছি ;
না বলা কথা তারা বানিয়ে
আকাশের গায়ে ছড়িয়েছি !..’’

..‘এলোমেলো-২’..

“..আমার কাছে কেউ এসো না
এলে কেবল দুঃখ পাবে ;
দু’চোখ ভরা স্বপ্ন বেচে
বিনিময়ে শুধু অশ্রু পাবে !..’’

..‘এলোমেলো-৩’..

“..সেহরিতে আমার ঘুম ভাঙ্গাতে
করছো কেন কষ্ট ?
চোখের পাতায় তোমার ঠোঁটের ছোঁয়া –
এটুকুই তো যথেষ্ট !..’’

..‘এলোমেলো-৪’..

“..হঠাৎ কখনও মাঝরাতে
ঘুম ভেঙ্গে গেলে ;
বুঝে নিও তুমি, পালিয়েছি আমি
চুমু দিয়ে তোমার গালে !..’’

..‘এলোমেলো-৫’..

“..আমার হাতের আংটি দু’টি
শুধুই আংটি নয় ;
ধরে রাখা তোমার অনামিকা তারা –
শুধুই আংটি নয় !..’’