“..কেন ডাকিনি তোমাকে বিশেষ কোন নামে..”
“..কখনও ডাকিনি তোমাকে বিশেষ কোন নামে
না কখনও তোমার নামকে সংক্ষিপ্ত করে,
না কখনও প্রচলিত প্রেমময় শব্দগুচ্ছে ;
শুনেছি অগণিত ফুলের, পাখির, প্রত্যঙ্গের নাম
যেগুলো দিয়ে ডাকা হয় প্রেয়সীদের, আকাংখিতাদের
সে নাম শুনে তারা পুচ্ছ মেলে ধরে
বর্ণিল ময়ূরের মতো স্নিগ্ধতা ছড়ায়,
পালক ফুলিয়ে রাজসিকভাবে ঘুরে ঘুরে
পায়রার মতো আবেশে জড়ায়,
মুহূর্তের মধ্যে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে
চঞ্চল চড়ুইয়ের মতো হৃদস্পন্দন বাড়ায়
প্রায় সময়ই তোমার কণ্ঠে ঝরে পড়ে অপ্রাপ্তি
যখন তোমার কোন বন্ধু বিশেষ নামে ডাকে তার প্রিয়কে ;
তোমার ভেতরটা কি তখন খুব বেশি ফুঁপিয়ে উঠে ?
আমার এই ছোট্ট মাতৃভূমিতে ৩৪টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে
এখানে আরও আছে ৬১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
এগুলোর কোনটিতেই এমন কোন শব্দগুচ্ছ শেখানো হয়না
যা দিয়ে আমি তোমার সবটুকুকে ডাকতে পারি
যা দিয়ে আমি তোমার ভেতর – বাহিরকে সাজাতে পারি
যা দিয়ে আমি আমাতে অন্তর্লীন তোমাকে
নিখুঁতভাবে প্রকাশ করতে পারি
ভালোবাসার শব্দগুচ্ছ শেখানো হয়না বলেই
এখানে আমরা প্রকৃত প্রেমিক হয়ে উঠতে পারিনা
আর প্রকৃত প্রেম নেই বলেই এখানে
মানুষ এবং পশুতে এতো বেশি পার্থক্যহীনতা !
মিথ্যে বলা হবে যদি তোমায় একটি পাখির নামে ডাকি ;
তোমার কণ্ঠের মতো কোন পাখির গান আমি আজও শুনিনি
অন্যায় করা হবে যদি তোমায় একটি ফুলের নামে ডাকি ;
তোমার স্পর্শের মতো পবিত্রতা কোন ফুলে আমি এখনও পাইনি
প্রবঞ্চনা করা হবে যদি তোমায় একটি প্রত্যঙ্গের নামে ডাকি ;
তোমার অস্তিত্বের মতো এতোটা প্রয়োজনীয়তা –
কোন প্রত্যঙ্গের প্রতি খুব কমই অনুভব করেছি আমি !
একটু খেয়াল করলেই দেখতে পারবে – স্বার্থপর মিথ্যাচারীতা
প্রচলিত প্রেমময় শব্দগুচ্ছে
একটু চাইলেই বুঝতে পারবে – নিরন্তর সীমাবদ্ধতা
লোক দেখানো এসব সম্বোধনে
আমার প্রেম দুর্বোধ্য
কিন্তু কপট নয় ;
আমার আকাঙ্ক্ষা অতলান্তিক
কিন্তু মুখোশে জড়ানো নয় ;
আমাদের এই ছোট্ট শহরে
সবাই ডুবে আছে প্রতিযোগিতায়
ভালোবেসে ভালোবাসার মানুষটিকে
ডাকার মতো নাম অনুপস্থিত
এখানকার বইয়ের পাতায় –
অর্জিত জ্ঞানে বিপুল অর্থহীনতা
এখানকার প্রিয়-প্রিয়াদের
শব্দ-ছন্দ-উপমায় !
তবু যদি কখনও জানতে চাও হয়ে অভিমানী
কেন ডাকিনি তোমাকে বিশেষ কোন নামে ;
বলবো শুধু – ডেকেছি আমি ঠিকই
বোঝনিতো তুমি এবং এভাবেই যাবো ডেকে
সম্বোধনহীন সম্বোধনে !..”
No comments:
Post a Comment