December 24, 2013
December 03, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..তোমার বুকের মাঝে
সেঁউতি জোড়া ফোটে;
সুগন্ধে লীন আমি
তৃষ্ণা বাড়ে ঠোঁটে!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..হোয়াইট হাউজেই আছো তুমি
নীলাভ পরী, নাকি সাদা?
যাবে কি ছুঁয়ে স্বপ্ন দিয়ে
তৃষ্ণার্ত ঠোঁটে – আধা!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..টিপ টিপ জোনাকির মতন
তোমার দু’চোখ চেয়ে রয়;
আমার ভেতর ক্ষরণ হয়
টুপ টাপ জোছনার মতন!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..যখনি তোমাকে ভাবি –
রাত্রি কিংবা দিন;
আমার ভেতর বাড়ে
শুধু বাড়ে ডোপামিন!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..এভাবেই ঘুমিয়ে থেকো
অভিমানী – ছলনাহীন;
লুকিয়ে আমিও জড়াবো বুকে
নাগরিক জোস্না – স্বপ্নহীন!..’’
November 08, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..সূর্যোদয় আমার –
নগ্নদেহে তোমার;
আমার সূর্যাস্ত –
তোমাতেই অবিরত!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..একই গাঙচিল ডানায় উড়ি
অপূর্ণ তবু সাধ;
এতো কাছাকাছি তবু যেন
কোন অজানার বাঁধ!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..বৃষ্টি ধারায় অথবা ঝর্ণায়
যতই আমি ভাসি;
ভেজা আর স্নানের পার্থক্য বুঝতে
তোমার কাছেই আসি!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..কিন্তু-এবং-যদি
দু’চোখে ধরা অশ্রুকে তোর
বানায় বিশাল নদী!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..স্বাধীনতায় কিংবা অধীনতায়
যখনই শাড়ি পড়বে তুমি;
প্রতিটি সূতায় জড়াবো তোমায়
কায়াহীন ছায়ায় - আমি!..’’
October 21, 2013
..‘তারপর একদিন’..
..‘তারপর একদিন’..
“..তারপর একদিন
হয়তো কোন শীত রাত্রির শেষে
দু’চোখ ক্লান্ত যখন রমণ আবেশে
আঁধার জড়াবে আমায়, ঘুমে
টিপ টিপ জোনাকির মতো শরীর তোমার
তন্দ্রা–ধোওয়া–স্বপনে মৃদু আলো জ্বেলে
আমারে কি পথ দেখাবে?
চোখের পাতার ‘পরে বিবসনা ভ্রম
সাজাবে নিটোল নদী – খোলা চুল জলে
একটি ছোট্ট ঘর পাতা দিয়ে ঘেরা
বিস্তীর্ণ প্রাঙ্গণ তোমার আঁচলেতে মোড়া
সকল পাখির স্বরে – স্বর তোমার ডাকবে আমারে
আমারে কি ছুঁয়ে দেবে?
তোমার পায়ের ছাপ যেখানে যেখানে
অনাঘ্রাতা গোলাপগুচ্ছ সেখানে গেঁথে দিয়ে
যখন হবে শেষ শাড়ির সবুজ
তুমি আর প্রকৃতি কামাতুর খুব
আমারে কি বুকে নেবে?
বুঝে কি নেবে আশ্রয় আমার
গ্রহের মতো একই ভ্রমণের শেষে
অথবা পরিযায়ী পাখি দেশ-বিদেশে
যারে ছুঁয়ে যায়নি কো কখনও দর্শন
অদৃষ্ট যার চিরকাল শুধুই ভ্রমণ
আমারে কি বুঝে নেবে?
হয়তো অজস্র মানবীর মতো
তুমিও আমারে ফিরিয়ে দেবে
আকাশে ছড়িয়ে নীল নীল মেঘদল
ব্যাথায় নীলাভ আমারে তুমি
টেনে নেবে না বুকে – হয়তো;
তারপর একদিন
কোন এক শীত রাত্রির শেষে
দু’চোখ ক্লান্ত যখন রমণ আবেশে
বুকে টেনে নেবে প্রকৃতি আমারে - নয়তো!..”
September 23, 2013
..‘যেন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাই তারে’..
..‘যেন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাই তারে’..
“..যেন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাই তারে
নিভাঁজ আকাশের নীল-সাদা মেঘে ছড়ালো যে আমারে;
দেখালো শুভ্র জোড়া সেঁওতি দ্বিধার পাপড়ি খুলে
মাতালো বিভায় সরিয়ে আঁচল আঁধারে সেঁজুতি জ্বেলে।
যেন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাই তারে
নিঃশ্বাসের উষ্ণ প্রস্রবণে স্নাত যে করে আমারে;
যেন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাই তারে
কাপুরুষ আমায় নির্ভয় দিলো যে অনুমোদিত অভ্যন্তরে।
যে দিলো বৃষ্টির নূপুরধ্বনি, জোস্না, অমিতাভ ঘাস
হাতের মুঠোয় বাঁধ-ভাঙা নদী, বুক-পাঁজরে স্থায়ী আবাস
দিলো ষড়ঋতু, দিলো রংধনু, দিলো স্তোত্রগুচ্ছ
স্বরলিপির মতো দ্যার্থহীন দিলো অনুভূতি স্থূল-সূক্ষ্ম
যে দিলো পাহাড়-অরণ্য সবুজ-লোকালয়-মরুভূমি
বৃক্ষের মতো স্থবির আমাকে বানালো পর্যটক বেনামী
শ্রাব্য শ্লোক হলো যে সীমিকা সিঁথির শোণিকা বিলিয়ে
যেন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাই তারে
আমারে রাঙাতে দু’চোখের পাতা
আঁকে যে ব্যাথার কাজলে –
যেন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাই তারে
একা ঘরে একা আয়নায়
যে খুঁজে ফেরে একা আমারে!..”
August 25, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..শান্ত আমি হিংস্রতর
তোমার নগ্ন বুকে;
ধীবর আমি সাঁতার ভুলি
তোমার কাজল চোখে!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..যদিও সময় চলে যায় দ্রুত
ঘড়ির কাঁটা ছুঁয়ে;
আমার দু’হাত ফিরে আসে শুন্য
তোমাকে, শুধু তোমাকে না পেয়ে!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..স্বপ্নগুলো উড়িয়ে দিলাম
রঙিন বেলুন যতো;
মেঘে মেঘে পড়ুক ঝরে
বুক ভরাবো কতো!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..তুমি নেই তাই স্বপ্নহীন
ঘরের প্রতিটি কোণ;
পাল্লা দিয়ে ধ্যানী বৃদ্ধ
হয়েছে মুঠোফোন!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..আমার কাছে চুম্বনের অর্থ –
আত্মসমর্পণ;
আলিঙ্গনকে তাই মনে হয় –
অঞ্জলি অর্পণ!..’’
August 15, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..চাইছি ভীষণ বৃষ্টি নামুক
দৃষ্টি ভাসুক জলে;
নির্ঘুম রাত বাঁধা পড়ে থাক
উষ্ণ তোমার আঁচলে!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..তবু যেন অতৃপ্তি
জেগে থাকে বুকে;
পিপাসা রয় অনন্ত
অভ্যন্তরে, ঠোঁটে!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..কম্পিত ঠোঁট, স্পন্দিত বুক
অথবা শুভ্র দু’পা;
তারচেয়েও বেশী প্রয়োজন
তোমাকে - অনাঘ্রাতা!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..রিমঝিম বর্ষায় কিংবা
টুপটাপ জোসনায়
খুঁজে না পেলে কাজলে ঢেকো চোখ
পাবে খোলা চুলে - আয়নায়!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..আঁচল তোমার বিছিয়ে রেখো
রাত-গভীরে আমি আসবো;
অভিমানী ঠোঁট ভিজিয়ে রেখো
পিপাসার্ত আমি ভালবাসবো!..’’
August 04, 2013
..‘তোমার উপস্থিতি আমার কাছে ভীষণ রকমের অন্য কিছু’..
..‘তোমার উপস্থিতি আমার কাছে ভীষণ রকমের অন্য কিছু’..
“..তোমার উপস্থিতি আমার কাছে ভীষণ রকমের অন্য কিছু
তোমার নাম; নামের অক্ষর – তোমার ছায়া; ছায়ার ভেতর
অপসৃয় কোথায় যেন মন্ত্রমুগ্ধ আমার শব্দ, আমার মনন
তোমার দাঁড়ানো জায়গাগুলো আলোকিত – অন্য রকম
তোমার হেঁটে যাওয়া পথ স্নিগ্ধ সবুজ – বসন্ত যেমন
স্থান–কাল–পাত্র অস্তিত্বশীল – শুধু তুমি আছো বলে
পৃথিবীর পরিক্রমণ, দিনরাত্রির আগমন বয়ে চলে
পায়ের ছাপ ধরে – রক্তে আমার – আমার শ্রবণে
ভাঙা চুড়ির শব্দে কণ্ঠ তোমার – বন্ধ চোখের অন্ধ পর্দায়
আর কোনও মুখ নেই – আছে শুধু নরম অবয়ব তোমার
সেই গন্ধ, সেই বিভা ছড়ায় যখন একাকী ঘরে
আমি আবৃত্তি করি প্রিয় কবিতা ঘুরে তোমায় বৃত্তাকারে
কখনও আঙুল আমার দিক বিভ্রান্ত হয় আঁধার চুলে
কখনও অধর আমার পিপাসার্ত ডাহুক আদ্র ঠোঁটের অনলে
কখনও শরীর ঝরে পড়ে শুকনো পাতায় তোমার আঁচলে
আর কোনও কবিতা নেই তোমার চোখের মতো দুর্বোধ্য এতো
কোনও স্থাপত্য নেই আকর্ষণীয় যতোটা তোমার সৌকর্য
আমার স্বপ্ন-অভিমান-রোগ-শোক-জরা-ব্যা ধি অথবা সময়
তোমার পদ্মপাপড়ি দু’পায়ের শুভ্র – স্বার্থহীন আয়নায়
প্রতিফলিত করে আলাদা রেখে দেয় – খুলে ফেলে মুখোশ
শব্দ–স্বপ্ন–ছন্দ হারানো কোনও এক ভীষণ অসহায়
প্রতিটি লোমকূপ – স্বেদ জমা উষ্ণ অঙ্গ–প্রত্যঙ্গের নীলিমায়
খুঁজে ফেরে হারানো–লুকানো–বিলানো অস্তিত্ব আমার
অবশেষে শ্রান্ত ছোট্ট নৌকা হয় কম্পিত শরীর আমার
বাঁধা পড়ে অচেনা ভুমির মসৃণ অনাঘ্রাতা নদীতটে
খুব সাবধানে এগিয়ে যাই টলোমলো ভীত দু’পা ফেলে
জোনাকির মতো জ্বলে জ্বলে আলোর মশাল জ্বেলে
দু’চোখ তোমার নিয়ে যায় আমায় অতল গহ্বরে
বাতাসে ভেসে বেড়ায় গন্ধ তোমার – তোমার উপস্থিতির ধূপ
অন্ধ-মূক-বধির আমি; প্রণয়ের গুঞ্জরিত মৌমাছি - চুপ!..”
July 22, 2013
..‘তোমাকে বলছি’..
..‘তোমাকে বলছি’..
“..তোমাকে বলছি –
যে তুমি কাজলে ঢাকো চোখ বেদনায়-কামনায়
যে তুমি গুঞ্জরিত মূর্ছনা অশ্রুত আঙিনায়
যে তুমি জিজ্ঞাসাবাদে ভীষণ অগোছালো
যে তুমি গোপন সুখে স্পন্দিত টলোমলো
যে তোমার জোড়া রমণীফুল – অপঠিত বই খুলে ধরা
যে তুমি ভোর আমার – কাঙ্ক্ষিত পাখিদের অপেরা
যে তোমার নগ্ন শরীর – অনন্য ভাস্কর্য
যে তুমি আরাধ্য আমার – অবারিত সৌন্দর্য
যে তুমি কখনো আমাকে ভেবে
বঙ্গোপসাগর এক ধরেছো অশ্রুবিন্দুতে –
মিছেমিছি;
যে তুমি কখনো আমাকে ভেবে
ওষ্ঠে তোমার ছুঁয়েছো অধরে
তোমাকে বলছি!
সকল সন্ন্যাসীর আছে এক লুকানো অতীত
এবং
সকল পাপীর আছে এক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত
আমি নাহয় পাপী হবো
অজানা ভবিষ্যতের আঁধারে হেঁটে হেঁটে হবো গাঢ়;
এখন হতে দাও জেগে ওঠা শিশির
তোমার নাকে, তোমার বুকে – কম্পিত থরোথরো!..”
July 15, 2013
..‘এ শহরে সবচেয়ে বড় অপরাধ’..
..‘এ শহরে সবচেয়ে বড় অপরাধ’..
“..দুই কোটিরও উপরে এ শহরে মানুষের বসবাস
রয়েছে অযুত-নিযুত দালানকোঠা, মসজিদ-মন্দির, ব্যাংক
অফিস-আদালত, বিবিধ আশ্রম এবং অজস্র অপরাধ
এখানে আছে ২৭টি বিনোদনমূলক, ৪টি সংবাদ নির্ভর
১১টি এফ এম স্টেশন এবং ১৬টি কমিউনিটি রেডিও চ্যানেল
যেগুলোতে প্রচারিত হয় জীর্ণ শ্লোগান, বন্ধ্যা স্তাবকতা
এক মুঠো কথা – দুই গ্লাস বাজনা – এক চিমটি সুরের আদলে
গানের নামে যন্ত্রণা;
এখানে পাওয়া যায় বিস্বাদ
একই ভাঁড়ের একাধিক ভাঁড়ামি
‘হৃদয়ছোঁয়া’ নামে হাস্যকর কাহিনী;
চারপাশ স্তব্ধ করে দেয়া কণ্ঠ
জোস্নাকে হিংসুটে করে দেয়া অবয়ব
শিশিরে স্নাত টুপটাপ শিল্প – এখানে অপরাধ!
এ শহরে ব্যাংকগুলোতে টাকা রাখা যায়
ভালোবাসা জমা করা যায় না
তাঁরা গচ্ছিত রাখে রূপকথার রাজহাঁস
অপ্রচলিত মুদ্রা – জমা রাখে না
নিটোল ভালোবাসার নিখাদ সঞ্চয় – এখানে অপরাধ!
এ শহরের মসজিদ-মন্দির-অফিস-আদালতে
শুধুই দেনা-পাওনার হিসেব
বুকপকেটে লুকানো জোনাকি
কেউ অবাক চোখে দেখে না;
লক্ষাধিক দালানকোঠায় বসবাস করে মানুষ
এখানে কেউ মনের ঘরে বাস করে না
মনে ও মননে একত্রে বসবাস – এখানে অপরাধ!
এখানে হৃদস্পন্দনকে ভাষায় রূপান্তর করা অপরাধ
সচ্ছল প্রেয়সীর অধরে অসচ্ছল ওষ্ঠে আল্পনা আঁকা
ধর্মান্ধের দু’চোখে সূর্যের প্রতিস্থাপন করা
ঝুম বৃষ্টিতে ঘরের কোনায় বসে অশ্রুতে ভেজা অপরাধ!
সামর্থ্য আছে, এ শহরে নেই শুধু ইচ্ছে পূরণের সাধ
দুই কোটিরও উপরে এখানে মানুষের অজস্র অপরাধ
মিথ্যা, কুৎসিত, লিপ্সা এখানে রাজত্ব গড়েছে যদিও
দু’চোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে বড় হওয়া –
এ শহরে সবচেয়ে বড় অপরাধ!..’’
July 09, 2013
..‘অদ্ভুত কেটে গেল সারাদিন আজ’..
..‘অদ্ভুত কেটে গেল সারাদিন আজ’..
“..অদ্ভুত কেটে গেল সারাদিন আজ
যদিও শিশিরের মতো অনিবার্য সকাল
সরোদের বুক চিরে কণ্ঠ তোমার
স্পন্দিত হয়েছিল খুব ভোরে – আমার
মুঠোফোনে বৃষ্টির ঝুম
ঘুম ভাঙ্গিয়ে ছিলে – বহুদূর যাবে বলে
আমার নোটবুক – দু’ঠোঁট তোমার
আমার অ্যালার্ম ঘড়ি – কণ্ঠ তোমার
যা বলার তা না বলে
অসমাপ্ত যদিও স্তব্ধ হঠাৎ
ইথারের অপারগতা তোমাকে পাবার
একবার, দু’বার এবং প্রচেষ্টা শেষবার।
খাবারের টেবিলে কোন কথা বলেনি সেই নারী –
যার উষ্ণ বুক ছিল প্রথম বিছানা আমার
পরিচিত রিকশাওয়ালাগুলো কেন যেন আজ
ফিরেও তাকায়নি আমার দিকে – আর
অপরিচিতদের ছিল সহজাত তাড়া
হেঁটেই পৌঁছলাম – আমার স্বপ্ন, আমার উদ্যান
মেঘ-সেঁচা জল নিয়ে দেখি গোলাপ বাগান
ফুটে আছে পৃথিবী কাঁপিয়ে –
একটি গোলাপও ফিরে দেখলো না
আমি প্রতিটি গোলাপের সামনে অপলক
দাঁড়ালাম; তাঁরা ফিরেও দেখলো না!
আমি একে একে ঘুরে এলাম
কাঁঠালচাঁপা – কৃষ্ণচূড়া – হাসনাহেনার দল
ঘাসফুল আমার, আমার বাঁশফুল;
অপলক দাঁড়ালাম; তাঁরা ফিরেও দেখলো না!
আমি ছুঁয়ে দিলাম সূর্যমুখীদের পাপড়ি
তাঁরা ফিরেও দেখলো না;
আমি নাড়িয়ে দিলাম লজ্জাবতীদের তরল
তাঁরা আঁচলে ঢাকলো না!
আমার মেঘ-সেঁচা জল, বিরল-অনল
তাঁরা ফিরেও দেখলো না!
তবুও অপসৃয় সূর্যালোক ছুটন্ত অবিরত
তুই – তুমি – আপনি এবং অনাহুত
উঠতি রাজনীতিবিদ, উদীয়মান ব্যাংকার, তরুণ বুদ্ধিজীবী
ছিঁচকে চোর, স্বাপ্নিক নির্মাতা, নারীদেহলোভী
সবার ভিড়ে শ্রোতা হয়ে আবারো
অবহেলিত ছিলাম, মুখরিত তাঁরা, আমি অবাঞ্ছিত
নিদাঘ কামনার মতো রাত্রি যখন
আঁটসাঁট জামা ফুঁড়ে স্তনের মতন
বাহিরে নিয়ে এলো – রাজপথে
ফিরে তাকালোনা কেউ আমার দিকে
আগুন এগিয়ে দিল না মোড়ের দোকানদার
হেঁটেই আবারো তাই রাস্তা পারাপার
জনকের সামনে দিয়েই রুমে ঢুকলাম
দেখেনি – যেন ঠিক চেনেনি আমায়
অদ্ভুত কেটে গেল সারাদিন আজ
এমন হয়নি কখনো আগে
হঠাৎ সরোদ ওঠে মুঠোফোনে বেজে
বৃষ্টির মতো ঝরে ঝরে যেন বলে গেলে –
কোথায় ছিলে-কেন ফোন কেটে গিয়েছিল সকালে-
কেন সারাদিনে একবারও পারোনি ফোন দিতে-
এবং অবশেষে অসমাপ্ত কথাটি বললে বেশ ধীরে – ‘ভালোবাসি’
শ্রবণে অঞ্জলি ঢেলে আরও বললে – ‘ভালোবাসি, খুব বেশী’
ঠিক তখনি পেছন থেকে বাবা বললেন –
‘কি আশ্চর্য! কখন এসেছ তুমি?’
আমি নির্বাক – বিলম্বিত শব্দগুচ্ছে দারুণ বিলীন
বুঝলাম – সারাদিন কেন ছিলাম অস্তিত্বহীন!..’’
July 04, 2013
..‘সরল বলে কিছু নেই; যেমন নেই সহজ’..
..‘সরল বলে কিছু নেই; যেমন নেই সহজ’..
“..সরল বলে কিছু নেই; যেমন নেই সহজ -
কাকে বলে সন্ধ্যা, কাকে বলে রাত্রি?
দৃষ্টিগ্রাহ্য তারা পাই খাঁজকাটা
হৃদয়ের নিচে এক টলটলে হ্রদ! তাতে এক মাঝি
হাঁক দেয়, অহর্নিশ এপার-ওপার করি যাত্রী।
সন্ধ্যা ঘরে ফেরে জলে ধুয়ে পা
সব কটা খিল এঁটে রাত্রি ঘুমায়
উত্থান অতঃপর দ্রুততায় বহুমাত্রিক পতন
বাঘ চোখ গায়ে এঁকে কিশোরী জোসনায়।
মৃদু কড়া নাড়া থেকে বজ্র নিনাদ
জেগে উঠে বসে নিষ্ঠুর ঘুমাই
আমার পরিচয় জানে বাতাস -
সে কে? তাঁর পরিচয় চাই!
কখনও চেতনা, বুদ্ধি, মন ও মুখোশের দেবী
কখনও মধুগৃহে আর্ত রাণী মৌমাছি
ভেজা আর স্নানের পার্থক্য জানা হলে -
পরিচয় ভুলে যাই - চেনা হলেই বাঁচি।
সুবর্ণা সে বসন্ত আমার, আমার যৌবন
তাকে বলি রাত্রির শিশিরে সাজানো সুন্দর সবুজ
সম্মুখে হাঁটুগেড়ে অনুনয় করি,
আধখানা দিয়েছে পরিচয়, আধখানার নাই খোঁজ।
বাজপাখি সমাজ মাটিতে চোখ
কোথাও নেই একজোড়া ছেঁড়া স্যান্ডেল
তাঁর নগ্ন পায়ে শুধু শোক!..’’
..‘প্রিয়, একটা গল্প বলি শোনো’..
..‘প্রিয়, একটা গল্প বলি শোনো’..
“..প্রিয়, একটা গল্প বলি শোনো –
ছোট্ট বেলায় ঘরহারা কেউ
বনের মাঝে বসত করে
নাম করেছে ‘বুনো’!
ঘোলা জলে তৃষ্ণা মেটে
প্রাণ কি ভরে কভু?
ঝর্না জলের স্বাদ পেতে সে
পথ হারাবে তবু!
পথের কোনও দিক নেই
যেমন নেই সমুদ্রের কোনও বন্দর
ভয় কি প্রিয়,
যদি উঠে আসো –
পথ হারিয়ে পথের উপর?..’’
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..যে আয়নায় নিজেকে দেখতাম
প্রতি সকালে আমি;
কাল তা ভেঙ্গে হলো অজস্র খণ্ড
দেখি – ভাঙ্গা টুকরায় শুধু তুমি!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..সে ধরতে বলে তার দুটি হাত
আমায় শক্ত করে;
হাত যে আমার প্রচণ্ড ঘামে
রাখবো ধরে কি করে?..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..লিখে দিলাম আমার দু’চোখ
যারা দেখতো শুধু তোমাকে;
দেখে যেন কোন অন্য ‘আমি’
আমারি মতো তার ‘তোমাকে’!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..বৃষ্টির সাথে আসবে তুমি
অপেক্ষায় ছিলাম বহুদিন;
অবশেষে হলো প্রতীক্ষাবসান –
এলো বৃষ্টি, তুমিহীন!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..হয়তো খুঁজিনা তোমায়
যদিও সময় কাটে বিষণ্ণ একা;
অপরিচিতার বুকে যাই ঘুম
অপরাজিতা তোমার – যদি পাই দেখা!..’’
May 25, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..যখন তুমি ভীষণ একা
শুনতে কি পাওনি -
তোমার হৃদপিণ্ডে আমার
নামের প্রতিধ্বনি?..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..এভাবেই হয়তো
এসে যাবে সেই দিন -
সঙ্গী-ঘেরা কাটবে তোমার;
আমার সঙ্গী-হীন !..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..সবাই যখন জানতে চায় -
‘কি হতে চাও তুমি?’
ইচ্ছে করে, বলেই ফেলি -
‘তোমার হবো আমি!’..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..অথচ পা-তোলা মেঘ
দু’চোখ জুড়ে আমার;
যখন দারুণ গর্ভবতী
স্বপ্নে দু’চোখ তোমার!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..আমার কাছেই লুকানো আছে
সেই অধরা গন্ধ;
আকাশ-পাতাল যে ফুল খুঁজে
আজকে তুমি অন্ধ!..’’
May 15, 2013
..‘চুমুর ভেতরে আমি ঘুমিয়ে যেতে চাই’..
..‘চুমুর ভেতরে আমি ঘুমিয়ে যেতে চাই’..
“..চুমুর ভেতরে আমি ঘুমিয়ে যেতে চাই
ঘুমের ভেতরেও আমি তোমাকে চুমু খেতে চাই
নির্বাক-সবাক প্রহরে চাই আমার ঠোঁটে তোমার ঠোঁট
উচ্চারিত কবিতা আমার চাই অভ্যন্তরে প্রতিধ্বনিত হোক
কপটতাহীন রমিত শয্যায়
আকাঙ্ক্ষিত শান্ততার অববাহিকায়
তোমার ভেতরে আমি যখন স্বাপ্নিক খুব গাঢ়
এলো চুল - কম্পিত বুক - স্পন্দন যেন আরও
আমি চাই সর্বস্ব তোমার; নাকে-গালে-মুঠোতে
আমি চাই সর্বস্ব তোমার; বুকে-পেটে-চেতনাতে
চাই আত্মসমর্পণ আমার - সুরভিত ভেজা ত্বকে
চাই নিবেদন আমার - দ্বিধাহীন যৌক্তিক আলোকে
ছন্দোবদ্ধ যুগল শরীরে চাই অতলান্তিক আহবান
তৃপ্ত দুর্লভ প্রশ্বাসে চাই তোমাকে আমার সমান
যেন পাই তোমাকে অহর্নিশ এবং তোমার উষ্ণ চুম্বন
আরও চাই ক্লান্ত দু’চোখে তোমায় পেতে নিদ্রিত মুদ্রণ
চুমুর ভেতরে আমি ঘুমিয়ে যেতে চাই
ঘুমের ভেতরেও আমি তোমাকে চুমু খেতে চাই
রমণ এবং রমণোত্তরকালে বিবসনা তোমাকে
চাই বুকের খুব কাছে;
মাংসপিণ্ড নয় - আমি তো জানি তোমার ভাঁজেই
আমার কবিতা লুকানো আছে!..’’
May 12, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৬’..
..‘এলোমেলো ১ - ৬’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..তোর দুর্বোধ্য শব্দে
প্রকাশিত রাগ-অভিমান
বুঝতে হলে - আমাকে
হতে হবে রাজা সোলায়মান!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..অপেক্ষার
কাজল - কালো ভীষণ
যতোটা হৃদয়ে রয়
ততোটা কি হয়
দু’চোখে প্রদর্শন?..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..ভ্রমন-বিলাসী
আমিও
হতে চাই ইবনে বতুতা;
ঘুরে বেড়াবো শরীরময়
মেলে ধরো তোমার সবটা!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..যখন
তোমার উদ্ধত বুক
গোপন সুখে কম্পিত;
তখন আমার স্বাপ্নিক চোখ
জলজ ভীষণ - স্তম্ভিত!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..তারপরও তুমি প্রথমা
আমার বুকে শুয়ে;
দ্বিতীয় ঝড়ের আগে
চুলগুলো ছড়িয়ে!..’’
..‘এলোমেলো - ৬’..
“..নীল হয়ে যাই আরও
আরও নীল, আরও নীল হয়ে
অপরাজিতার কাজলে ফুটি;
ফুটি অপরিচিতার হৃদয়ে!..’’
May 08, 2013
"..নীল হয়ে যাই আরও.."
"..নীল হয়ে যাই আরও.."
"..নীল হয়ে যাই আরও, আরও নীল, আরও নীল হয়ে
অপরাজিতায় জন্মে, ফুটি কৃষ্ণচূড়া হয়ে
শিউলির বোঁটা ছোঁওয়া দুধেল জোস্না - লজ্জায়
চলে গেছে ফিরে, গতরাতে ঘোমটা দেয়া আধারে
ঘাসের বুকে নেই, পথের পাশেও নেই
নেই বাতাসের চাদরে - স্তম্ভিত আঁধারে
কারও প্রেম রক্তাক্ত হলো কারও প্রেমের নগ্ন নখরে!
যে ফুলগুলো বিলীন হলো কাল অগোচরে
বিস্মৃতি নয় - সবুজ শাখায়, কিংবা আকাংখিতার গলায়
অথবা থাকার কথা ছিল তাদের শিশির জমা ঘাসের চাদরে
অজস্র উদ্যান থেকে তুলে আনা এ পুষ্পার্ঘ্য
হিজল-তমাল-শরবনের ক্রন্দসী বাতাস
গুমরে গুমরে কাঁদে জানালা আড়ে - অদৃশ্য!
আমার বাগানের সদ্য ফোটা ছোট ছোট ফুল
চেয়ে থাকে নিস্পলক - নরম, তুলতুলে পাপড়ি
মেলে দিয়ে জিজ্ঞেস করে -
'কোন ফুল তুমি?'
নীল হয়ে যাই আরও, আরও নীল, আরও নীল হয়ে
অপরাজিতায় জন্মে,
ফুটি কৃষ্ণচূড়া হয়ে - 'আমি'!.."
April 24, 2013
..‘অনেক দিন পর আজ’..
..‘অনেক দিন পর আজ’..
“..অনেক দিন পর আজ
ফেলে আসা অরণ্যের আলপথে খালি পায়ে হাঁটলাম।
অদ্ভুত একটা শীতল ভালোলাগা ছিল ধমনী-শিরায়;
বাহির ছুঁয়েও যে ভেতর স্পর্শ করা যায় -
আরেকবার উপলব্ধি করলাম।
খুব পরিচিত লাগছিল পাতার ভাঁজে-ভাঁজে, ডালের ফাঁকে-ফাঁকে
লুকিয়ে থাকা প্রিয়দের কণ্ঠস্বর, পায়ের তলায় রুপার দানার মতো
ভেঙ্গে যাচ্ছিলো স্পন্দিত ঘটনাবলীর শুকনো পত্রগুচ্ছ
ছুটে যাওয়া কিশোরীর পিঠে দুলতে থাকা
বেণীর মতো দিক হারানো বাতাস
এলোমেলো করে দিচ্ছিলো কাঙ্ক্ষিত সুবাসে
অবচেতন মনের দীর্ঘশ্বাস জমা বরফ গলে গিয়ে
কখন যে এখানে-সেখানে
স্বচ্ছ ডোবা তৈরী করে রেখেছিল -
বুঝিনি সেখানে এখনও দেখা যেতে পারে
অস্পষ্ট মুখায়বগুলো!
খুব ইচ্ছে করছিলো চোখ বন্ধ করে বৈষম্যহীন অনুভবে
ঐ কণ্ঠগুলোতে অনন্তকাল চুমু খেতে;
ঐ শুকনো পাতার তৈরী পোশাক বানিয়ে
গায়ে জড়িয়ে বুক পকেটে হারানো সুবাস জমা করে
একটু পর পর লুকিয়ে লুকিয়ে গন্ধ নিতে!
আমার ঘরে তো কোন আয়না নেই;
কেন অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে মুখায়বগুলো?
ওঁরা কি জানে না -
ওঁরাই আমার আয়না?..’’
April 23, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..তুই - তুমি - আপনি যেভাবেই ডাকি
ঠোঁটে - মুখে - মুঠোতে নয়
ছোট্ট বুকের পাঁজরতলেই
আমি তাকে রাখি!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..তুমি আসোনি গতরাতে - তাই
আঁধারে ছিল না ঘ্রাণ;
জোসনা হয়েছিল শয্যাসঙ্গী
অযাচিত - নিষ্প্রাণ!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..দালানকোঠা নয়, গাছতলাও নয়
একটু পেতে ঠাই -
এই জীবনে আমি
তোর ভেতরটাকেই চাই!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..ভালো লাগে হাসন - লালন
রবীন্দ্র - নজরুল
এবং
হঠাৎ নীরব সঙ্গীত -
তোমার ভেজা চুল!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..আমি আছি এবং থাকবো
ঠিক যেমনটা ছিলাম;
নিচ্ছি, নেবো গন্ধ তোমার
ঠিক যেভাবে নিতাম!..’’
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..একটু বসো -
তোমার ঠোঁটের মতো গোধূলির রঙ হোক;
একটু বসো -
আমার দু চোখ তোমার কায়ার ছায়া হোক!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..কথার ঠোঁটে ফুটবে কথা
ক্লান্ত হবে ঠোঁট;
ঘুমকাতুরে চোখ খুঁজবে
ঘুম-বিনাশী চোখ!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..এই বরং ভুল না হয়ে ভালো হলো
চাপা থাকুক বুকে দ্রোহের অনল
প্রতিধ্বনিত হোক শ্রবণে অস্ফুট গুঞ্জন
আঁধার ঘুমে সূর্য দু চোখ হোক ঢুলুঢুলু!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..বালিশে আঁচল বিছানো ছিল
দু চোখে আমার ঘুম ছিল না;
দু ঠোঁটে কথার বর্ষা ছিল
অধরে তোমার ঝরা হলো না!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..তখনও ছুঁইনি তোমায়
কাঁপা ঠোঁটে থরোথরো;
তখনও কবিতা ছিল
অবগুণ্ঠিত - জড়সড়!..’’
April 08, 2013
..‘তুমি ভীষণ একা’..
..‘তুমি ভীষণ একা’..
“..তখনও তুমি খুব একা নও
মাঝে মাঝেই যখন তুমি নোনতা জলে ভেজা
ক্ষুদে বার্তায় জানাও তোমার লাগছে ভীষণ একা
তখনও তুমি খুব একা নও!
হৃদয়স্পর্শী;
তোমার উপমাগুলো ধারক-বাহক তোমার একাকীত্বের -
জানো কি তুমি - তুলে ধরে শুধু তোমার সূক্ষ্ম শ্রুতি;
ওগুলোতে নেই - কখনোই ছিল না আন্তর অনুভূতি!
তোমার ভাষায় -
চার দেয়ালে আটকে পড়া পথের খোঁজে বাদুড়ের মতো
পলকহীন চোখে প্রিয়মুখ দেখা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর মতো
অথবা সোপ-কেসে রাখা সুগন্ধি সাবান
অথবা ঝড় - বৈশাখ শুরুর, বাহুবাঁধা তাবিজ - তান্ত্রিক গুরুর
কিংবা উচ্চকিত তর্জনী - ধ্বংসের আহবান;
ছায়া, দীর্ঘশ্বাস কিংবা নিঃসঙ্গ বৃক্ষ
নদী, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কিংবা মৌন পাহাড়
তোমার ভাষায় মাঝে মাঝে তুমি এদেরই মতো খুব একা হও
জানো কি তুমি - আমার ভাষায় তখন তুমি মোটেও একা নও!
যে চার দেয়ালে পথের খোঁজে আটকে পড়েছে একাকী বাদুড়
ওখানে আরও আটকে আছে দাম্পত্য কলহে দুজন মানুষ
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা কখনোই জানে না
তাঁদের আগে-পরে এবং কিছু সময় তাঁদের সাথে
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হচ্ছে কত জন অগণিত
একটু খেয়াল করলেই সুগন্ধি সাবানে তুমি
খুঁজে পাবে শরীরের ঘ্রাণ
কালবোশেখির আগে এবং পরে বয়ে যাওয়া বাতাস
বাহুতে বাঁধা তাবিজের আগেই মননে বাঁধা কুসংস্কারের বাঁধন
বলে দেয় -
এরা কেউ একা নয়; যেমন শুধু আমার দেশেই নয় -
অনেক উন্নত দেশেও চলছে
ধর্মের সুতোয় বোনা ফিতে দিয়ে লালসার লুঙ্গিকে
বেঁধে রাখার মস্তিষ্কহীন প্রতিযোগিতা!
অস্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর ছায়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের পরে দীর্ঘশ্বাস
শিকড়ে বিপুল আগাছাসহ বৃক্ষ;
নদী মানেই জননী, দ্বীপ মানেই দৃশ্য এবং অদৃশ্যমানের বিভক্তি
আর পাহাড়?
কান পেতে শোন - আছড়ে পড়বে বুকে এসে
ঝর্ণার কলতান!
এদের কেউই একা নয় যদিও তুমি মাঝে মাঝে ভাবো -
এদেরই মতো খুব একা হও
বলছি তোমায়, আমার ভাষায় তখন তুমি মোটেও একা নও
এদের মতো নয় - অন্য কখনও নয়
তখনই তুমি ভীষণ একা -
‘চাই শুধু তোমাকে’ - উচ্চারণের পর
ভেবে দেখো - তুমি ভীষণ একা!..’’
March 30, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৩’..
..‘এলোমেলো ১ - ৩’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..আমি ক্ষণকালের কবি
ক্ষণিক আমার কবিতা সবই;
ঠোঁটে-বুকে তোর বাঁধা পড়ি
ভাঙ্গি তোকে, নিজেকে গড়ি!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..ও কাজল চোখে কাজল ছিল না
না পাওয়া ছিল - গাঢ়;
ও কালো চোখে নিষেধ ছিল না
আহবান ছিল - আরও!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..একাকী লাগে মাঝে মাঝে
জানি আঁচল বিছানো আছে
বারংবার স্নাত হচ্ছে ঠোঁটে রাখা ঠোঁট;
চাইছি না আর - চাইছি আমার
নাম উচ্চারিত হোক!..’’
March 19, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..চাইনি বলেই হয়তো তোমায়
আজও খুঁজে পাইনি;
পাইনি বলেই পাবার আশা
মন থেকে হারাইনি!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..আমারও শ্রাবণ আসে
রোদনে ভরে বুক-চোখ
তবু দেখাই মেঘহীন আকাশ
তবু হই প্রেমি কপোত!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..বুঝিনি কখন বদলে গেছে
তোমার আঁচলখানি;
তুমি যাকে প্রেম বলো
আমি তাকে স্পর্শ বলে জানি!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..জানি ফিরবে বুকে ঠিকই
তাই সূর্যকে বলেছি - ডুবতে না;
জেনেছি অপেক্ষার নামই প্রেম
প্রাপ্তির নাম - প্রেম না!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..সৃষ্টিকর্তা, তোমার কাছে
একটাই অনুরোধ -
চোখ খুললেই দেখি যেন
কাজলরাঙা চোখ!..’’
March 04, 2013
..‘ভয়ংকর এক দুঃস্বপ্ন দেখে’..
..‘ভয়ংকর এক দুঃস্বপ্ন দেখে’..
“..ভয়ংকর এক দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে ফোন করেছিলে তুমি গতকাল মাঝরাতে
ডুবে ছিলাম আমি তখন পাথর দিয়ে বাঁধাই করা কলম যাদুকরের দেয়ালে
আমার নির্লিপ্ততা আত্মসমর্পণ করলো তোমার অদ্ভুত স্বপ্ন, কম্পিত প্রশ্বাসে
তোমার সারা শরীর প্লাবিত হচ্ছিলো ওঁদের ঢেলে দেয়া কেরোসিনে
নারকীয় উল্লাস, প্রতিশোধের হুংকার এবং ক্ষমতার উন্মাদনা নিয়ে
ফেটে পড়ছিলো ওঁদের কণ্ঠ, কেঁপে উঠছিল বাতাস
ওঁদের মুষ্টিবদ্ধ হাতের আঘাতে; বিস্ফোরিত চোখে বিশ্বাসঘাতক কণ্ঠে
তুমি ছিলে অপারগ - অস্তিত্বের প্রকাশক শব্দ উচ্চারণে
তোমার সারা শরীরে ঢেলে দেয়া হচ্ছিলো কেরোসিন
- স্বপ্নে তুমি দেখেছিলে!
যুগ যুগ ধরে পাঠ করা স্তোত্র ঠোঁট গোল করে বাতাসে ছুঁড়ে দিয়ে
ওঁরা তোমার শরীরে ছোঁয়ালো পাঁজরতলে জমানো ঘৃণার বারুদ শলাকা
নিমেষে তুমি রুপান্তরিত হলে চলমান অগ্নিকুণ্ডে;
ঠিকরে পড়তে লাগলো সোনালী আভা
তোমার আর্তচিৎকারের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চললো প্রাপ্তি
তাঁদের আকাংখিতা, পেলবতা, যথার্থতা - ধ্বংসের নিকষ ব্যাপ্তি
সারা শরীরে আগুন তোমার পালন করে যাচ্ছিলো তার ধর্ম ধ্রুব
সারা শরীরে আগুন তোমার - প্রসারিত, লালায়িত, প্রজ্জলিত
বিস্মিত তুমি আগুনের লেলিহান শিখা সারা শরীরে তোমার জ্বলে
- স্বপ্নে তুমি দেখেছিলে!
হঠাৎ তুমি দেখতে পেলে দুর্বিনীত আগুনের শিখা জ্বলছে ঠিকই শরীরে
পুড়ছে না কোনও আঙুল তোমার; পুড়ছে না ত্বক, পায়ের পাতা
হাঁটু - উরু - কোমর - পেট - বুক - গলা - ঠোঁট - চোখ; শুধু পুড়ে পুড়ে
ছাই-ভস্ম হয়ে যাচ্ছে মস্তিষ্ক তোমার ভেতরে ভেতরে!
ভীত নও, তুমি বিস্মিত হয়েছিলে - সুরক্ষিত শরীরে
দহিত মস্তিষ্ক নিয়ে তুমি বিস্মিত হয়েছিলে!
ঘুম ভেঙ্গে তুমি জানতে চেয়েছিলে -
স্বপ্নে তুমি এটা কেন দেখেছিলে!
তোমার পায়ের পাতা, আঙুল - আমার পদ্মফুল
কত অজস্রবার প্রতিদিন জোড়া বাঁধে ঠোঁটেতে আমার
তোমার নিমফুল উরু - প্রাচুর্য আমার অধরের খেলাঘর
তোমার রহস্য দ্বীপ - থরোথরো নাভি আর মসৃণ পেট
দিয়েছে দ্বিধা যতোটা বিনিময়ে নিকটত্ব পেয়েছে অনেক
তোমার বুক - স্বাপ্নিক জোড়া শালিক আমার
তোমার গলা - নাক - চোখ - কপোল আর গুয়ের্নিকা ঠোঁট
ধ্বংস করে প্রতিনিয়ত আমাকে ঢেলে দেয় অমৃত আরক
বুকে হাত দিয়ে একবার বলতে পারবে, শুধু একবার -
বঞ্চিত হয়েছে তোমার শরীরের দৃশ্যমান কোনও অংশ
স্পর্শ আমার ঠোঁটের অথবা বর্ষণ নিঃস্বার্থ - আমার ভালোবাসার?
স্পর্শাহতই শুধু সামর্থে আমার
তাই মিশে আছি সকল অঙ্গ - প্রত্যঙ্গে তোমার
কখনও বোধে বিরাজ করতে পারিনি;
জেনে গেছি বিস্মিত - তুমি নও আমি
তোমার দেখা দুঃস্বপ্নের অর্থ তাই ব্যাখ্যা করিনি
পুড়েছে কপাট লাগানো আমিহীন মস্তিষ্ক তোমার
আমার স্পর্শে স্নাত কোনও অঙ্গ পুড়েনি!..’’
March 03, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৩’..
..‘এলোমেলো ১ - ৩’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..তখনও আমি আমার ছিলাম
যখন দু ঠোঁট এগিয়ে দিলে;
তখনই আমি সব হারালাম
যখনই বুকে জড়িয়ে নিলে!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..ভালোই যাচ্ছে আমায় ছেড়ে
তোমার দিবা-রাতি;
- তুমি তো দেখি আমার মতোই
মস্ত মিথ্যাবাদী!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..কথা দিচ্ছি - আজ রাতে
অন্তক্ষরে গান শোনাবো
তোর দু ঠোঁটে ঠোঁট রেখে!..’’
February 18, 2013
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নয়
তোমার আমার জীবন;
অপ্রাপ্তিকেই সুখ মেনেছি
নাইবা হলো মিলন!..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..আমার ঘরে কোন আয়না নেই
বড় একটা ছবি আছে শুধু তোর;
সাজ-সজ্জা নয়, ঐ ছবিতে তাকিয়ে
আনি রাত্রি আমার, আনি ভোর!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..যে তুমি রহস্যময়ী
প্রেমে-প্রহসনে;
সে তুমি আকাংখিতা
প্রকাশে-গোপনে!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..কাঁপা হাতে যখনই
অটোগ্রাফ চাইলে তুমি;
ছন্দ হারালো শব্দগুলো
কথা হারালাম আমি!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..আমার যেন কেমন লাগে
কেমন লাগে;
তোর চোখে চোখ রাখলেই
এমন লাগে
এমন লাগে!..’’
February 12, 2013
..‘দীর্ঘ ষোল বছর ধরে আমি কুৎসিত এই বাড়িটিকে চিনি’..
..‘দীর্ঘ ষোল বছর ধরে আমি কুৎসিত এই বাড়িটিকে চিনি’..
“..দীর্ঘ ষোল বছর ধরে আমি কুৎসিত এই বাড়িটিকে চিনি
জ্বলে যাওয়া রঙ, উঠে আসা ইট-পাথর আর ময়লা আবর্জনায়
ঢেকে আছে পায়ে হাঁটা পথ; দুর্গন্ধ এখানে-সেখানে প্রায়
এড়িয়ে যায় সবাই এই দালানটির অস্তিত্ব, চোখ পড়ে গেলে
কখনও দ্রুততার সাথে পরিবর্তিত হয় দৃষ্টি পথচারীর
আস্তানা গেড়েছে এখানে তাই চোর, বদমাশ, নেশাখোর
তবে মাঝে মাঝে দারুণ উপকারে আসে কুকুর-বিড়াল
অথবা তলপেটে আকস্মিক প্রবল চাপ অনুভূত অসহায়দের
ভেঙ্গে পড়া কাঠামো, নেশাগ্রস্তদের অশ্রাব্য গালাগালি আর
বিকট দুর্গন্ধ দালানটিকে করে তুলেছে পোড়োবাড়ি, আবর্জনার ভাগার!
শুনেছি এই দালানটিও ছিল কারও কারও স্বপ্নের আবাসন
দেয়ালে ঘেরা ছিল, নির্ঝঞ্ঝাট ছিল এই দালানটি একসময়
কালক্রমে ভুল হাতের ফুল হয়ে আজ এটি পচা শ্যাওলা
বিশ্বাস হতোনা প্রথমে শুনে যদিও আমি
দীর্ঘ ষোল বছর ধরে কুৎসিত এই বাড়িটিকে চিনি!
সেদিন এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো চোখের সামনে
একটা ফুটফুটে তরুণী এসে থামল রিকশায় করে
শেষ বিকেলের কিছু আগে; পাশ কেটে যাওয়ার সময়
মনের অজান্তে চোখ পড়লো তার পায়ের দিকে
যখনই সে তার রজনীগন্ধা পা রাখলো নোংরা
বাড়িটির রাস্তায়, দেখলাম একটু একটু করে সবুজে
ভরে গেল ন্যাড়া দেয়াল; রঙিন হয়ে উঠলো ইট-পাথর
সুন্দর, আকর্ষণীয় হয়ে উঠলো দালানটির ভেঙ্গে যাওয়া
কাঠামো ঠিক যেন জিম ফেরত সন্তুষ্ট তরুণের শরীর
অপসৃয় ছায়া পথ করে দিলো সাজানো বাগানের
দালানটির উপর এসে পড়লো এক অপার্থিব আলো
তরুণীটি পথে নেমে ভারসাম্য রাখতে না পেরে
হাত রাখলো সদর দরজার লোহায়, অনায়াসে
তা রুপান্তরিত হলো লতানো গুচ্ছ ফুলের আঁচলে
দেখলাম দরোজা খুলে যাচ্ছে ধীরে - ভেতর থেকে
ছান্দসিক প্রজাপতির দল ছুটে আসছে উড়ে উড়ে
শুনতে পেলাম মোহনীয় কল-কাকলী, আচ্ছন্ন সুর
ঝাপটা দিলো নির্যাস কাঁঠালচাঁপা, গোলাপ, বকুলের
দেখতে পাচ্ছিলাম না কি ছিল ভেতরে তবু মনে হলো
যা কিছু থাকুক ভেতরে নিশ্চয়ই আছে সাজানো
স্পষ্ট শুনতে পেলাম প্রাণের স্পন্দন কাঙ্ক্ষিত
স্পষ্ট দেখতে পেলাম কুৎসিত বাড়িটি সজ্জিত
তরুণীটি চলে গিয়েছিল তার ঠিকানায় ঠিকই
আমি আজও কুৎসিত বাড়িটিকে সজ্জিত দেখি
চলে গেছে এরপর অনেক বছর যদিও আমি
খুঁজে পাইনি তাকে এখনও - যার পায়ের স্পর্শ
এনে দিয়েছিল সবুজ, দু একটা শব্দ জন্ম দিয়েছিল
আচ্ছন্ন সুর এবং করতলের ছোঁয়া দিয়েছিল সজীবতা
তুমি ছুঁয়ে দিলেই যদি এতো সবুজ হয়
তুমি মুখ খুললেই যদি এতো সুর হয়
তুমি তাকালেই যদি এতো প্রাণ হয়
তরুণী, আমি আছি এবং থাকবো
হয়ে আজীবন পূজারী তোমার
আসবে কি এখানে; ধরবে কি জড়িয়ে
বুক একবার, আজকের বাংলার?..’’
February 05, 2013
“..ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাঁদের..’’
“..ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাঁদের..’’
“..ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাঁদের
যারা আরও একটি সম্পূর্ণ দিন ভরিয়ে দিচ্ছেন অবসরে - আমাদের;
যারা হরতালের মাধ্যমে পাহাড়সম দুশ্চিন্তা থেকে
এক দিনের মুক্তি দিলেন - মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের!
যারা মহাসড়কে একত্রিত হয়ে
পবিত্র শ্লোক উচ্চারণ করে
অন্ধকারের মতো ছড়িয়ে দিলেন বীভৎস হুংকার;
দিনের শেষে রাতের মতো
দহন শেষে জ্বলনের মতো
মনে করিয়ে দিলেন -
মুক্তিযুদ্ধে হারানোর ব্যাথা কেবলমাত্র কিছু মানুষের;
এ ক্ষত নয় সবার!
ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাঁদের
যারা মনে করেন অবোধ আমরা শিশু এখনও
ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাঁদের
যারা মনে করেন স্তনের বদলে ফিডার মুখে গুঁজে দিলে
আমরা বুঝতে পারবনা কখনও!
ধন্যবাদ সহযোগে একটি তথ্য জানাতে চাইছি তাঁদের
রাজনীতি, অর্থনীতি, বেশ্যানীতি, দৃশ্যনীতি
সবকিছুই হয়তোবা জানা আপনাদের
তবু জেনে রাখবেন - ২১৪ বছরের পরাধীনতার
বুক মোচড়ানো ইতিহাস শুনে বড় হয়েছি আমরা -
এ দেশ কারও বাবারও নয়, কারও স্বামীরও নয়
নয় কারুকাজ করা লাঠি - রক্তের ফল্গুধারা ঝরিয়ে
ওযু শেষে আপাত পবিত্র হাতের;
একবার, যদি একবার সুযোগ আসে মাতৃভূমির ঋণ শোধের -
যে ছেলেটির আঙুল সারাদিন ছুটে বেড়াচ্ছে
কিবোর্ডে, ফেসবুকে;
যে মেয়েটির দুচোখ সারাদিন ঘুরে বেড়াচ্ছে
টেলিভিশনের পর্দায়, হিন্দি সিরিয়ালে;
এক মুহূর্তও নষ্ট না করে ঝাঁপিয়ে পড়বে দেশ রক্ষার্থে -
থাকবেনা পড়ে পিঠ, কোনও বিছানায়
এই নতুন প্রজন্মের!..’’
“..ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাঁদের
যারা আরও একটি সম্পূর্ণ দিন ভরিয়ে দিচ্ছেন অবসরে - আমাদের;
যারা হরতালের মাধ্যমে পাহাড়সম দুশ্চিন্তা থেকে
এক দিনের মুক্তি দিলেন - মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের!
যারা মহাসড়কে একত্রিত হয়ে
পবিত্র শ্লোক উচ্চারণ করে
অন্ধকারের মতো ছড়িয়ে দিলেন বীভৎস হুংকার;
দিনের শেষে রাতের মতো
দহন শেষে জ্বলনের মতো
মনে করিয়ে দিলেন -
মুক্তিযুদ্ধে হারানোর ব্যাথা কেবলমাত্র কিছু মানুষের;
এ ক্ষত নয় সবার!
ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাঁদের
যারা মনে করেন অবোধ আমরা শিশু এখনও
ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাঁদের
যারা মনে করেন স্তনের বদলে ফিডার মুখে গুঁজে দিলে
আমরা বুঝতে পারবনা কখনও!
ধন্যবাদ সহযোগে একটি তথ্য জানাতে চাইছি তাঁদের
রাজনীতি, অর্থনীতি, বেশ্যানীতি, দৃশ্যনীতি
সবকিছুই হয়তোবা জানা আপনাদের
তবু জেনে রাখবেন - ২১৪ বছরের পরাধীনতার
বুক মোচড়ানো ইতিহাস শুনে বড় হয়েছি আমরা -
এ দেশ কারও বাবারও নয়, কারও স্বামীরও নয়
নয় কারুকাজ করা লাঠি - রক্তের ফল্গুধারা ঝরিয়ে
ওযু শেষে আপাত পবিত্র হাতের;
একবার, যদি একবার সুযোগ আসে মাতৃভূমির ঋণ শোধের -
যে ছেলেটির আঙুল সারাদিন ছুটে বেড়াচ্ছে
কিবোর্ডে, ফেসবুকে;
যে মেয়েটির দুচোখ সারাদিন ঘুরে বেড়াচ্ছে
টেলিভিশনের পর্দায়, হিন্দি সিরিয়ালে;
এক মুহূর্তও নষ্ট না করে ঝাঁপিয়ে পড়বে দেশ রক্ষার্থে -
থাকবেনা পড়ে পিঠ, কোনও বিছানায়
এই নতুন প্রজন্মের!..’’
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো ১ - ৫’..
..‘এলোমেলো-১’..
“..এখনও শরীর বকুলতলা
গন্ধে তোমার;
এখনও দুচোখ টইটম্বুর
স্বপ্নে তোমার !..’’
..‘এলোমেলো-২’..
“..কি দারুন বিষাদ
কি প্রগাঢ় শূন্যতা;
শ্রুত হয় তোমার শুধু
অনুভূত হয় না!..’’
..‘এলোমেলো-৩’..
“..ওরা গেছে চলে
স্থাপত্য দেখবে বলে;
আমার চোখে সৌন্দর্য
তোর নগ্ন দেহের ভাস্কর্য!..’’
..‘এলোমেলো-৪’..
“..আমার দেশে দারিদ্র না থাকলে
আমি শুধু শীতকেই ভালবাসতাম;
আমার মধ্যে কবিত্ব না থাকলে
আমি শুধু তোর কাছেই ছুটে আসতাম!..’’
..‘এলোমেলো-৫’..
“..আজ আকাশে কোনও তারা নেই
শুধু জ্বলছে চাঁদ খুব একাকি;
ডুবে আছে ঘুমে তোমার দুচোখ
ছুঁয়ে এসেছি ঠোঁটে চুপি চুপি!..’’
January 29, 2013
..‘অধরে ধরা অধরা’..
..‘অধরে ধরা অধরা’..
“..প্রায়সময় আমার মনে হয় - যদি সেদিন না থাকতে তোমরা
আজ কিভাবে প্রকাশ করতাম - বৃষ্টির মায়াজাল, রৌদ্রের আলো-খেলা
কিভাবে প্রকাশিত হতো আমাদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা
কিভাবে হতো প্রতিফলিত আমাদের আলো লাগা, অন্ধ লাগা?
প্রাচুর্য কিংবা নিশ্চয়তা; জীবনে কোনটাই ছিলনা তোমাদের
ছিল শুধু ক্ষুদ্র বুকে গনগণে উত্তাপ - প্রবঞ্চনা, শোষণ, ক্রোধানলের
লাজুক সহপাঠিনীর চুড়ির রিনিঝিনি উপেক্ষা করে সেদিন
এসেছিল ছুটে তোমাদেরই একজন - ছাত্র; রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রেখে
সহধর্মিণীর সুখ, আদরিনি কন্যার বায়না পূরণের মাধ্যম রিকশা
ছুটে এসেছিল তোমাদেরই একজন - রিকশাওয়ালা;
হাইকোর্টের দাপ্তরিক কাগজপত্র; দোকানের হিসেবের খাতা ছুঁড়ে ফেলে
এসেছিলে ছুটে তোমরা, ঢেলে দিয়েছিলে বুকের রক্ত - সাক্ষী মহাকাল
তাই বুঝি আজ আমরা অকুতোভয় স্বাপ্নিক; বাংলার মাটিতে
ফোটা ফুল - তাই বুঝি এতো, এতো বেশী লাল!
বায়ান্নর আগুন লাগা ফাল্গুনে সেদিন যদি না আসতে তোমরা
অশ্রুর মতো
প্রশ্বাসের মতো
হৃদয়ের অনাবিষ্কৃত অন্তঃস্থল থেকে উঠে আসতো কি বাংলা?
প্রিয়, বড়ো বেশী প্রিয় বাংলাকে এনে দিতে সেদিন
অদ্বিতীয় ভালোবাসা বিসর্জন দিলো যারা;
তাঁদের জন্য উৎসর্গিত হলো সন্তান আমার -
প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অধরে ধরা অধরা’!..’’
January 25, 2013
“..উপলব্ধি..’’
“..উপলব্ধি..’’
“..আমার জীবনে প্রথম নারী এবং নায়িকা,
যার
ঠোঁটে জীবনে প্রথম একেঁছিলাম চুম্বনের আলপনা,
যার
বুকের উষ্ণতা আমার চির আরাধ্য,
যার
নাম হয়তবা আমার কণ্ঠে উচ্চারিত প্রথম শব্দ-
সে
যতোটা আমার, তারচেয়েও
বেশী আপনার!
সে
আমাকে সবসময়
স্নাত করেছে আবেগী চোখের জলে
আর
আপনি আমাকে আলোকিত করেছেন আপনার
সূর্যালোকে।
সে
আমাকে তার
দীঘল চুলের বেণীর মতোই স্নিগ্ধ বাধঁনে
বেধে রেখেছে আমার
হাত-পা-বুক-কোমর;
আর
আপনি প্রবাহিত করেছেন আমাকে ঝর্নাধারার মতো,
আমাকে
উৎসারিত করেছেন গজলের মতো-
সীমাবদ্ধতায়
নয়, বিশুদ্ধতার
ছকে।
আপনি কখনোই আমাকে
বিরত
করেন নি কোনো কিছু করা থেকে,
আপনি
কখনোই চাননি আমি শুধু তত্ত্বীয় দিকটুকু জানি
আর
তাই আজ আমার ক্ষুধা পৃথিবীর মানচিত্রের মতোই বিশাল।
'উৎসাহ' এবং 'প্রশংসা' শব্দদু'টির গন্ধ এবং রঙ
ঠিক
আপনার মতো কারন আপনার কাছ থেকেই
এই
শব্দদু'টির
প্রয়োগ এবং ফলাফল
আমি
পূর্ণাঙ্গ ভাবে শিখেছি।
এভারেস্ট আমি দেখিনি
কিন্তু আমার চোখে
পৃথিবীর
সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ
আপনার অনবনত মাথা -
ক্ষমতার
অপপ্রয়োগের সামনে,
মিথ্যার
মুখোশের সামনে,
লোভের
প্রাচুর্যের সামনে;
আমার
শ্রবণে আসা সবচেয়ে মধুর শব্দ -
দুর্যোগের
রাতে দরজার বাইরে পাপোশে
আপনার
জুতাজোড়া ঘষার আওয়াজ;
আমার দৃষ্টিতে
সর্বাধিক সুদর্শন আপনার মুখায়ব;
ঘুম
ভাঙ্গা সকালে জানালা গলে আসা রোদের চেয়েও
বেশি
আকাঙ্ক্ষিত - আপনার
ভারী কণ্ঠস্বর।
সে আমাকে শিখিয়েছে আবেগ,
সে আমাকে শিখিয়েছে আবেগ,
আপনি
শিখিয়েছেন যুক্তি;
সে
আমাকে শিখিয়েছে মুঠো করে ধরা,
আপনি
শিখিয়েছেন হাতের তালুতে পৃথিবী তৈরী করা;
সে
আমাকে পাখি দেখিয়েছে,
আপনি
দেখিয়েছেন পাখির স্বাধীনতা;
সে
আমাকে আকাশ দেখিয়েছে,
আপনি
দেখিয়েছেন আকাশের বিশালতা!
সে আমার 'অক্ষমতায়' হাহাকার করেছে;
সে আমার 'অক্ষমতায়' হাহাকার করেছে;
আপনি
এসে আলতো
করে তুলে নিয়ে গেছেন ‘অ’
এবং
তাকে রূপান্তরিত করেছেন 'ক্ষমতায়',
সে একটু একটু
করে গড়ে তুলেছে আমার চোখ,
নাক, ভ্রু,হাত, পা - আমার
অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ;
আপনি
গড়ে তুলেছেন আমার
বোধ, আমার
সত্ত্বা!
সে আমার জন্য যেভাবে বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে,
আপনি
সেভাবে কাঁদেননি;
আপনার
প্রতি আমার
অসংখ্য অমীমাংসিত অভিযোগ রয়েছে
তবু
আমার চোখে আপনি শ্রেষ্ঠ মানুষ;
আপনি
কিছুক্ষণ পরপর দাঁড়িয়েছেন বিশ্রামের অভিনয়ে,
অনেক
দূরত্ব রেখে - যা আসলে
আমাকে
পথ দেখানোর জন্য;
তাই
আপনি আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ।
সে হলো আমার 'মা', যে হলো আমার 'শরীর' এর মতো;
সে হলো আমার 'মা', যে হলো আমার 'শরীর' এর মতো;
যা
ছাড়া আমার চারপাশের কাছে আমি 'আমি' নই!
আপনি হলেন আমার 'বাবা', যে হলো আমার বোধের মতো;
আপনি হলেন আমার 'বাবা', যে হলো আমার বোধের মতো;
যা
ছাড়া আমার কাছে আমি 'আমি' নই!..’’
Subscribe to:
Posts (Atom)