April 24, 2013

..‘অনেক দিন পর আজ’..

..‘অনেক দিন পর আজ’..

“..অনেক দিন পর আজ
ফেলে আসা অরণ্যের আলপথে খালি পায়ে হাঁটলাম।
অদ্ভুত একটা শীতল ভালোলাগা ছিল ধমনী-শিরায়;
বাহির ছুঁয়েও যে ভেতর স্পর্শ করা যায় -
আরেকবার উপলব্ধি করলাম।

খুব পরিচিত লাগছিল পাতার ভাঁজে-ভাঁজে, ডালের ফাঁকে-ফাঁকে
লুকিয়ে থাকা প্রিয়দের কণ্ঠস্বর, পায়ের তলায় রুপার দানার মতো
ভেঙ্গে যাচ্ছিলো স্পন্দিত ঘটনাবলীর শুকনো পত্রগুচ্ছ
ছুটে যাওয়া কিশোরীর পিঠে দুলতে থাকা
বেণীর মতো দিক হারানো বাতাস
এলোমেলো করে দিচ্ছিলো কাঙ্ক্ষিত সুবাসে
অবচেতন মনের দীর্ঘশ্বাস জমা বরফ গলে গিয়ে
কখন যে এখানে-সেখানে
স্বচ্ছ ডোবা তৈরী করে রেখেছিল -
বুঝিনি সেখানে এখনও দেখা যেতে পারে
অস্পষ্ট মুখায়বগুলো!

খুব ইচ্ছে করছিলো চোখ বন্ধ করে বৈষম্যহীন অনুভবে
ঐ কণ্ঠগুলোতে অনন্তকাল চুমু খেতে;
ঐ শুকনো পাতার তৈরী পোশাক বানিয়ে
গায়ে জড়িয়ে বুক পকেটে হারানো সুবাস জমা করে
একটু পর পর লুকিয়ে লুকিয়ে গন্ধ নিতে!

আমার ঘরে তো কোন আয়না নেই;
কেন অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে মুখায়বগুলো?

ওঁরা কি জানে না -
ওঁরাই আমার আয়না?..’’

April 23, 2013

..‘এলোমেলো ১ - ৫’..

..‘এলোমেলো ১ - ৫’..

..‘এলোমেলো-১’..

“..তুই - তুমি - আপনি যেভাবেই ডাকি
ঠোঁটে - মুখে - মুঠোতে নয়
ছোট্ট বুকের পাঁজরতলেই
আমি তাকে রাখি!..’’

..‘এলোমেলো-২’..

“..তুমি আসোনি গতরাতে - তাই
আঁধারে ছিল না ঘ্রাণ;
জোসনা হয়েছিল শয্যাসঙ্গী
অযাচিত - নিষ্প্রাণ!..’’

..‘এলোমেলো-৩’..

“..দালানকোঠা নয়, গাছতলাও নয়
একটু পেতে ঠাই -
এই জীবনে আমি
তোর ভেতরটাকেই চাই!..’’

..‘এলোমেলো-৪’..

“..ভালো লাগে হাসন - লালন
রবীন্দ্র - নজরুল
এবং
হঠাৎ নীরব সঙ্গীত -
তোমার ভেজা চুল!..’’

..‘এলোমেলো-৫’..

“..আমি আছি এবং থাকবো
ঠিক যেমনটা ছিলাম;
নিচ্ছি, নেবো গন্ধ তোমার
ঠিক যেভাবে নিতাম!..’’

..‘এলোমেলো ১ - ৫’..

..‘এলোমেলো ১ - ৫’..

..‘এলোমেলো-১’..

“..একটু বসো -
তোমার ঠোঁটের মতো গোধূলির রঙ হোক;
একটু বসো -
আমার দু চোখ তোমার কায়ার ছায়া হোক!..’’

..‘এলোমেলো-২’..

“..কথার ঠোঁটে ফুটবে কথা
ক্লান্ত হবে ঠোঁট;
ঘুমকাতুরে চোখ খুঁজবে
ঘুম-বিনাশী চোখ!..’’

..‘এলোমেলো-৩’..

“..এই বরং ভুল না হয়ে ভালো হলো
চাপা থাকুক বুকে দ্রোহের অনল
প্রতিধ্বনিত হোক শ্রবণে অস্ফুট গুঞ্জন
আঁধার ঘুমে সূর্য দু চোখ হোক ঢুলুঢুলু!..’’

..‘এলোমেলো-৪’..

“..বালিশে আঁচল বিছানো ছিল
দু চোখে আমার ঘুম ছিল না;
দু ঠোঁটে কথার বর্ষা ছিল
অধরে তোমার ঝরা হলো না!..’’

..‘এলোমেলো-৫’..

“..তখনও ছুঁইনি তোমায়
কাঁপা ঠোঁটে থরোথরো;
তখনও কবিতা ছিল
অবগুণ্ঠিত - জড়সড়!..’’

April 08, 2013

..‘তুমি ভীষণ একা’..

..‘তুমি ভীষণ একা’..

“..তখনও তুমি খুব একা নও
মাঝে মাঝেই যখন তুমি নোনতা জলে ভেজা
ক্ষুদে বার্তায় জানাও তোমার লাগছে ভীষণ একা
তখনও তুমি খুব একা নও!

হৃদয়স্পর্শী;
তোমার উপমাগুলো ধারক-বাহক তোমার একাকীত্বের -
জানো কি তুমি - তুলে ধরে শুধু তোমার সূক্ষ্ম শ্রুতি;
ওগুলোতে নেই - কখনোই ছিল না আন্তর অনুভূতি!

তোমার ভাষায় -
চার দেয়ালে আটকে পড়া পথের খোঁজে বাদুড়ের মতো
পলকহীন চোখে প্রিয়মুখ দেখা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর মতো
অথবা সোপ-কেসে রাখা সুগন্ধি সাবান
অথবা ঝড় - বৈশাখ শুরুর, বাহুবাঁধা তাবিজ - তান্ত্রিক গুরুর
কিংবা উচ্চকিত তর্জনী - ধ্বংসের আহবান;

ছায়া, দীর্ঘশ্বাস কিংবা নিঃসঙ্গ বৃক্ষ
নদী, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কিংবা মৌন পাহাড়
তোমার ভাষায় মাঝে মাঝে তুমি এদেরই মতো খুব একা হও
জানো কি তুমি - আমার ভাষায় তখন তুমি মোটেও একা নও!

যে চার দেয়ালে পথের খোঁজে আটকে পড়েছে একাকী বাদুড়
ওখানে আরও আটকে আছে দাম্পত্য কলহে দুজন মানুষ
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা কখনোই জানে না
তাঁদের আগে-পরে এবং কিছু সময় তাঁদের সাথে
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হচ্ছে কত জন অগণিত
একটু খেয়াল করলেই সুগন্ধি সাবানে তুমি
খুঁজে পাবে শরীরের ঘ্রাণ
কালবোশেখির আগে এবং পরে বয়ে যাওয়া বাতাস
বাহুতে বাঁধা তাবিজের আগেই মননে বাঁধা কুসংস্কারের বাঁধন
বলে দেয় -
এরা কেউ একা নয়; যেমন শুধু আমার দেশেই নয় -
অনেক উন্নত দেশেও চলছে
ধর্মের সুতোয় বোনা ফিতে দিয়ে লালসার লুঙ্গিকে
বেঁধে রাখার মস্তিষ্কহীন প্রতিযোগিতা!

অস্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর ছায়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের পরে দীর্ঘশ্বাস
শিকড়ে বিপুল আগাছাসহ বৃক্ষ;
নদী মানেই জননী, দ্বীপ মানেই দৃশ্য এবং অদৃশ্যমানের বিভক্তি
আর পাহাড়?
কান পেতে শোন - আছড়ে পড়বে বুকে এসে
ঝর্ণার কলতান!

এদের কেউই একা নয় যদিও তুমি মাঝে মাঝে ভাবো -
এদেরই মতো খুব একা হও
বলছি তোমায়, আমার ভাষায় তখন তুমি মোটেও একা নও

এদের মতো নয় - অন্য কখনও নয়
তখনই তুমি ভীষণ একা -
‘চাই শুধু তোমাকে’ - উচ্চারণের পর
ভেবে দেখো - তুমি ভীষণ একা!..’’