February 28, 2014

..‘এলোমেলো ১ - ৫’..

..‘এলোমেলো ১ - ৫’..

..‘এলোমেলো-১’..

“..স্পর্শাহত আমার দু’হাত
জড়িয়ে ছিল কাল সারারাত
অদ্বিতীয় সৌন্দর্য –
তাঁর দেহের ভাস্কর্য!..’’

..‘এলোমেলো-২’..

“..কায়া হারিয়ে ছায়ায়
রাখিস বেঁধে আমায়;
আসবো ছুটে তখনই
চাইবি পেতে যখনই!..’’

..‘এলোমেলো-৩’..

“..দোহাই তোমার, আর দিওনা
ঐ ওষ্ঠে রঞ্জন;
কেউ না বুঝুক – আমিতো বুঝি
পেট ব্যাথার মূল কারন!..’’

..‘এলোমেলো-৪’..

“..ফুটুক যতোই বিছানা জুড়ে
নারীর বুনো ফুল;
কবি নেবে শুধু গন্ধটুকুই
তাঁর হবে না ভুল!..’’

..‘এলোমেলো-৫’..

“..মাথায় ছিল পিচ ঢালা পথ
পায়ের তলায় হাওয়ার কপোত
ছায়ায় তোমার ছায়া ছিল
তাইতো ছিলাম এলোমেলো!..’’

February 20, 2014

..‘তারপর কি হবে?’..

..‘তারপর কি হবে?’..

“..তারপর কি হবে?
যে তুমি জুড়ে আছো আমার হাতঘড়ির ডায়ালে
যে তুমি ধরে আছো কালো – আমার বৃদ্ধাঙ্গুলে
পাখিদের অপেরায় সকাল আমার
ছুঁড়ে দেয়া জালের মতো আঁধার নামার
এবং মধ্যাহ্ন – ছায়াহীন খুব একা
জানালায় আরও গাঢ় নিমীলিত সন্ধ্যা
তুমি কি কবিতা হবে?

দু’হাতের পাতায়-আঙুলে-নখে
তোমার বুকের গন্ধ হয়ে তুমি কি মিশে রবে?
নীরবে-নিঃসঙ্কোচে
নিভৃতে-নির্বিবাদে
যে আমি নিহত হই অধরে তোমার
জলে আর জোসনায় জীবিত আবার
তোমাকে ঠিকই খুঁজে নেবে
তারপর, তারপর কি হবে?

নতুন তোমাকে পেয়ে পুরনো তোমাকে
নক্ষত্রের মতো ক্ষয়ে পথের ধূলোতে
পড়ে রবে; ধরে রেখে বুকের গভীরে
দু’চোখ আমার ডানাভাঙা গাঙচিল – মেনে নেবে
তুমিও দুর্বোধ্য, কবিতা যেমন!

হয়তো তুমিও দাঁড়াবে এসে কোন এক স্মৃতির কার্নিশে
বাচাল নারীর মতো ঝড়ের বাতাসে
হঠাৎ আলোর বাতি নিভে গেলে পরে
জড়াবে কি তারে তখন মনে করে আমারে
নাকি অতন্দ্রিলা হবে?
উষ্ণ বাহুর আলিঙ্গনে বাঁধা পড়ে
থরোথরো কেঁপে ওঠা অতন্দ্রিলা হবে?
বলোনা, তারপর কি হবে?..”

February 12, 2014

..‘তাঁর টিকলির মতো নির্বাক দুলে উঠেছিল হৃদয় আমারও’..

..‘তাঁর টিকলির মতো নির্বাক দুলে উঠেছিল হৃদয় আমারও’..

“..তাঁর টিকলির মতো নির্বাক দুলে উঠেছিল হৃদয় আমারও
বুঝিনি কেউ আছে; কেউ ভালোবাসে এভাবে আমাকে – কখনো!

আমি তাঁর ছায়া ছিলাম; চোখভরা মায়া ছিলাম
এলোচুলের দোলা ছিলাম; উদ্ধত বুকের স্ফুলিঙ্গ ছিলাম
রুপক-উপমা-অনুপ্রাস ছিলাম
নগ্ন দু’হাতে জোড়া কঙ্কণ ছিলাম
বুঝিনি এর আগে কখনো
আমি তাঁর আজ, কাল
এবং আগামি ছিলাম!

আমি তাঁর নিঃশ্বাসের গন্ধ জানতাম
আমি তাঁর কম্পনের ছন্দ জানতাম
যদিও
বুঝিনি কেউ একজন এমন আছে
এভাবে ভালোবেসে এতোটা কাছে
কখনো!

কপোলে কালো নদী আর তনুতে জড়িয়ে
ভাঙ্গা রুপার মেঘদল – সে স্পর্শাহত ছিল;
তাঁর টিকলির মতো হৃদয় আমারও
সেদিনই প্রথম নির্বাক দুলে উঠেছিল

আমি তাঁকে পারিনি ফেরাতে হাতে ধরে
আজো তবু মুঠোফোনের ওপারে
ঢেলে দেয়া হয় নীরবতার বিষ অহর্নিশি
শ্রবণে আমার অনূদিত হয় – ‘ভালোবাসি, ভালোবাসি’!..”

February 07, 2014

..‘চলে এসো গুনগুন’..



..‘চলে এসো গুনগুন’..

“..প্রতিদিন কতো অযুত-নিযুত মানুষ তোমাকে দেখছে;
কতো অজস্র মানুষের সাথে তোমার কথা হচ্ছে
সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত!

অথচ দেখো যে শ্রবণ অপেক্ষারত তোমার উষ্ণ প্রশ্বাসের,
স্পন্দিত পা দুটির টুপ টাপ শব্দের,
কথার মধ্যে হঠাৎ বাচ্চাদের মতো আদুরে গলার,
ঝর্ণার মতো নহে নহে প্রিয়র’,
শীতল হাওয়ার মতো জানিনা তুমি কেমন করে এলে
সে শ্রবণ আজ বঞ্চিত!

যে চোখদুটো অপেক্ষা করতো
তোমার অল্প স্বল্প চুলের দোলার,
সাজ-সজ্জাহীন আকাঙ্ক্ষিত মুখের,
কাজলে ঢাকা নির্ঘুম রাত কাটানো চোখ জোড়ার,
তুলতুলে গোলাপি ঠোঁটের
সে দুচোখ আজ বঞ্চিত!

আমি জানি তুমি অভিমানী; একরোখা
তবুও ভেবেছিলাম তুমি আমাকে শাস্তি দিয়ে হলেও ক্ষমা করবে

আমি ভেবেছিলাম একটি নির্দিষ্ট তারিখ তুমি মনে রাখবে
আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করে অবশেষে
শুষ্ক আমাকে স্নাত করবে বাদল দিনের প্রথম ধারার মতো!

তুমি মনে রাখনি
এই তারিখটা অন্য কেউ নয় শুধু তুমি জানতে;
তবু তুমি মনে রাখনি

তোমার মনে আছে আমরা যখন প্রথমদিকে অভিমান করতাম
তখন আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলামঃ
যা-ই ঘটুক, যতোই দূরত্ব বাড়ুক
স্বেচ্ছা নির্বাসনে যাবার আগে একে অপরের অনুমতি চাইবো!

তুমি আমাকে দেয়া তোমার সকল কথা রেখেছ;
আমি তোমাকে দেয়া আমার সকল কথা ভেঙ্গেছি
কিন্তু তুমি এই একটি কথা রাখনি
এবং আমি এই একটি কথা রেখেছি!

বাচিক শিল্পীর মতো শুধু আবৃত্তি নয়
একবার শ্রোতা হও; সঙ্গী করো শ্রবণ

যদি কখনো সুযোগ মেলে অথবা ইচ্ছে হয়
চলে এসো গুনগুন;
আমার বাগান দেখতে চায়
রক্ত-মাংসে বেড়ে ওঠা বুক পকেট থেকে ঝরে পড়া
সবচেয়ে স্নিগ্ধ ফুল!..

February 04, 2014

..‘তোমার প্রতিটি অভিযোগ সত্য’..

..‘তোমার প্রতিটি অভিযোগ সত্য’..

“..তোমার প্রতিটি অভিযোগ সত্য!

আমার বিরুদ্ধে করা তোমার প্রতিটি অভিযোগ
আমি নিঃসঙ্কোচে মেনে নিচ্ছি।

আমি কখনোই তোমাকে বোঝাতে পারিনি –
আমি তোমাকে কতোটা চাই!
আমার সবসময় মনে হতো –
তুমি তো আছোই!
তুমি তো আমাকে জানোই!

আমি জানি – আমি যতক্ষণ কথা বলি;
তোমাকে ভুলে থাকতে পারি,
কিন্তু আমাকেও কথার মাঝে
থামতে হয়; শ্বাস নিতে হয়!

এই শ্বাস নেয়ার মধ্যেই - আছো শুধু তুমি!

আমি তোমাকে বলতাম –
আমি তোমার কোন আত্মীয়ের বাসায় যাবো না;
আমি তোমার সাথে কখনও কেনাকাটা করতে যাবো না;
তোমাকে নিয়ে বেড়াতে যাবো না –
আমি আসলে বোঝাতে চাইতাম –
আমি শুধু তোমার সাথে থাকতে চাই।

তোমার সাথে অনেক কিছু নিয়েই কথা বলতাম;
শুধু মুখ ফুটে বলতে পারতাম না –
তোমাকে নিয়ে আমার চাওয়াগুলো!

কতবার বলতে চেয়েছি –
তুমি চুলে বামদিকে সিঁথি করলে অনেক সুন্দর লাগে;
তোমার কাঁধে মাথা রেখে আমি
বাসে করে অনেক দূরে যেতে চাই;
তুমি তোমার কণ্ঠে গান রেকর্ড করে দেবে,
আমি শুনবো –
এসব কোনকিছুই আমি তোমাকে বলতে পারিনি!

অজস্রবার আমার ইচ্ছে হয়েছে
তোমাকে নিয়ে বই কিনতে যেতে,
সন্ধ্যায় রাস্তায় হাঁটতে,
তোমার চোখে পলকহীন তাকিয়ে থাকতে,
তোমার পায়ের পাতা আমার গালে লাগিয়ে রাখতে,
তোমার বুকে মুখ লুকিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে –
আমি তোমাকে কোনকিছুই বলতে পারিনি।

আমি চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাই –
পাঁচতলার পাশের রুমে তুমি
সাদা জামা পড়ে বসে আছো আমার জন্য;
বেইলি রোডের ‘দেশাল’–এর সামনে তুমি
জিন্স-এর জ্যাকেট পড়ে দাঁড়িয়ে আছো আমার জন্য;
ম্যাঙ্গো ক্যাফে থেকে বের হয়ে সামনে অপেক্ষা করছো –
পাশাপাশি বসে আপু-ভাইয়ার সামনে বিব্রত আমার জন্য!

কতো অযুত–নিযুতবার আমি তোমাকে ছোট্ট করে
লুকিয়ে রাখতে চেয়েছি আমার বুক পকেটে
এবং একটু পর পর তোমাকে বের করে
তোমার ঠোঁটে চুমু খেতে চেয়েছি গভীরভাবে –
আমি তোমাকে বলতে পারিনি!

আমি প্রতিটিবার বলতে চেয়েছি –
তুমিই আমার সুন্দর;
বলতে পারিনি।

অসংখ্যবার তোমাকে বলেছি – ‘অপ্রাপ্তিতেই সুখ’!
আমি তোমাকে বোঝাতে পারিনি,
তুমি যখন আমার সামনে আসো –
কতোটা এলোমেলো হয়ে যাই এই আমি!
তোমার উপস্থিতি সুখের চেয়েও
অনেক বিশাল কিছু, এই ক্ষুদ্র আমার কাছে।

তুমি কি জানো, সারাদিনে বলা
আমার শব্দগুলো বর্ণে–গন্ধে–ছন্দে
তোমার মতই স্নিগ্ধ এবং মারাত্মক একরোখা!

ঐদিন তোমার বান্ধবীর সাথে
ফোনে কথা হল – প্রায় ৪০ মিনিট!
আমি জানি এটা তোমার সাথে
আমি কখনোই পারতাম না;
তোমার কণ্ঠ আমার ভেতরের
আমিকে কেড়ে নেয়।

কতো কথা হল ওর সাথে
কিন্তু তোমাকে আমি কখনোই
উজাড় করে কিছু বলতে পারিনি।

শুনলাম এখন নাকি তোমার কেউ একজন আছে –
যে তোমাকে মুখ ফুটে সব বলতে পারে।

ভালো, আমার মতো তো নয়!
মনে মনে ভালোবাসার আটলান্টিক মহাসাগর
প্রবাহিত না করে প্রদর্শিত সুইমিং পুল অনেক ভালো!

ভেবেছিলাম আজ তোমাকে
আমার ভেতরটা খুলে দেখাবো
কিন্তু আজও দেখো – যা বলতে চেয়েছি
তা বলতে পারলাম না;
যা বলতে চাইনি – শুধু তা-ই বলা হলো।

আমি তোমাকে কিছুই দিতে পারিনি।
আমি তোমাকে কিছুই বলতে পারিনি।

আমি শুধু চাই – প্রচণ্ড কষ্ট পেয়ে,
নির্বাক হয়ে, পথ হারিয়ে
যে কাঁধে এসে একদিন আমি মাথা রাখতাম;
সে কাঁধটা যেন কেউ একজন
আজীবন জড়িয়ে ধরে রাখে আকাঙ্ক্ষিত ভালোবাসায়!

তুমি ভালো থেকো;
আমি না হয় আমার না বলা কথাগুলো
জমিয়ে রাখতে রাখতে একদিন
চুপ হয়ে যাবো;
গহীন অরণ্যের মতো নিশ্চল, নিশ্চুপ!..’’